শিক্ষামন্ত্রীর ‘ভ্যাম্পায়ার’ আক্রমণ রাজ্যপালকে, ‘জুনিয়র কর্মী’কে জবাব দিতে নারাজ বোস, আলোচনা করব মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই, বললেন রাজ্যপাল

শিক্ষামন্ত্রীর 'ভ্যাম্পায়ার' আক্রমণ রাজ্যপালকে, 'জুনিয়র কর্মী'কে জবাব দিতে নারাজ বোস, আলোচনা করব মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই, বললেন রাজ্যপাল

শিক্ষামন্ত্রীর ‘ভ্যাম্পায়ার’ আক্রমণ রাজ্যপালকে, ‘জুনিয়র কর্মী’কে জবাব দিতে নারাজ বোস, আলোচনা করব মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই, বললেন রাজ্যপাল। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কোনও মন্তব্যের জবাব দিতে নারাজ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বরং যে কোনও সমস্যায় রাজ্যপাল সরাসরি কথা বলবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সোমবার রাজভবনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানালেন রাজ্যপাল। সেখানে শিক্ষামন্ত্রীর ‘ভ্যাম্পায়ার’ আক্রমণের কোনও জবাব দেননি বোস।

 

রাজভবনের সঙ্গে শিক্ষা দফতর বা রাজ্য সরকারের এহেন দূরত্ব প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে নাম না করে রাজ্যপাল বলেন, ”আমার যদি কিছু বলার থাকে বা কোনও কিছুর প্রয়োজন হয়, তাহলে আমার সংবিধানিক সহকর্মী মুখ্যমন্ত্রীকে বলব, তার অধস্থন সহকর্মীকে বলব না।” এমন মন্তব্য করে কার্যত তিনি শিক্ষামন্ত্রীকেই বোঝাতে চেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ দোড়্রগোড়ায় কড়া নাড়ছে লোকসভা ভোট, জেলাশাসকদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক কমিশনের

উল্লেখ্য, গত শনিবার সকালে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখান থেকে বেরোনোর  সময় সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ”আজ মধ্যরাতের জন্য অপেক্ষা করুন। অ্যাকশন কাকে বলে দেখতে পাবেন।” এরপর নিজের এক্স হ্যান্ডেলে রাজ্যপালের এমন মন্তব্যকে কটাক্ষ করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু  লেখেন, ”সাবধান! সাবধান! সাবধান! শহরে নতুন রক্তচোষা (ভ্যাম্পায়ার) এসেছে। নাগরিকেরা দয়াকরে সতর্ক থাকুন। ভারতীয় পুরাণ অনুযায়ী, ‘রাক্ষস প্রহরের’ জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছি।” তাঁর এই কটাক্ষের জবাবে সোমবার নাম না করে শিক্ষামন্ত্রীকে কার্যত নীরব বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপাল।

 

মধ্যরাতে নবান্ন এবং দিল্লিতে চিঠি পাঠানো নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্যপালকে। তবে এই সংক্রান্ত বিষয়ে সব উত্তরই সংক্ষিপ্ত ভাবে দিয়েছেন রাজ্যপাল।  তিনি জানান, ”যেটা গোপনীয়, সেটা গোপনীয়ই।” কেনই বা সেই চিঠি পাঠানোর প্রয়োজন হল? এমন প্রশ্নের জবাবে আনন্দ বোস বলেছেন, ”আমি কিছু জানাতে চেয়েছিলাম।”

 

মঙ্গলবার বিদেশ সফরে রওনা হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।  চিঠি বিতর্ক নিয়ে যাতে মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরে কোনো চাপ না পরে, সে বিষয়েও দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন রাজ্যপাল।  মুখ্যমন্ত্রী সফর সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ”মুখ্যমন্ত্রী বিদেশে যাচ্ছেন, আমি চাই না এমন সময় তাঁর ওপর কোনও চাপ দেওয়া হোক। যখন তিনি বিদেশ সফরে থাকবেন, সেই সময় তাঁর ওপর কোনও অতিরিক্ত ভার যেন না দেওয়া হয়। তিনি ফিরে এলেই আমরা বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করব।” চিঠি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে যে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান, সে কথাই এমন মন্তব্যের মাধ্যমে বুঝিয়েছেন বলে মনে করছে প্রশাসনিক মহলের একাংশ।

 

তবে রাজভবনে ফাইল আটকে থাকা নিয়ে সরকারপক্ষ যে অভিযোগ তুলেছে, তার জবাবও দিয়েছেন রাজ্যপাল। তাঁর কথায়, ৮টি ফাইল এসেছে। তার মধ্যে ৭টি ফাইল নিয়ে আমি প্রশ্ন পাঠিয়েছি রাজ্য সরকারের কাছে। সাতটি ফাইলের ব্যাখ্যা চেয়েছি, তাই সরকারি দফতর গুলিতেই সাতটি ফাইল আটকে রয়েছে, রাজভবনে আটকে নেই। আর একটা ফাইল আদালতের বিচারাধীন।” আবার উপাচার্য নিয়োগ নিয়েও নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন বোস। তিনি বলেছেন, ”স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। সিলেকশন কমিটি তৈরি হবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ এবং ইউজিসির নিয়ম অনুযায়ী। তার পরেই স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হবে। তত দিন পর্যন্ত অস্থায়ী উপাচার্য থাকবেন। অন্তর্বতী উপাচার্যদের জন্য কোনও পৃথক মানদণ্ড নেই।”