বাবা গ্রেফতারীর পর ছুটির দিনে দুপুরে ইডির দফতরে মেয়ে। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মেয়ে প্রিয়দর্শিনীর কাছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফে কিছু নথি চাওয়া হয়েছিল। সেইসব নথি নিয়েই রবিবার সকালে ইডির দফতরে পৌঁছন তিনি। প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁর স্ত্রী এবং মেয়ের আয়ের ওপরও নজর রয়েছে তদন্তকারীদের। শুধু তাই নয়, তদন্তে নেমে ইডির আধিকারিকরা জানতে পেরেছিল, ২০১৬ সালে প্রিয়দর্শিনীর অ্যাকাউন্টে ৩ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা ঢোকে। সেই প্রেক্ষিতে বালুর মেয়ের কাছে নথি চাওয়া হয়েছিল।
আয়-ব্যয় সংক্রান্ত বিভিন্ন হিসাব দিতেই এ দিন ইডি দফতরে আসেন প্রিয়দর্শিনী। এদিন মাত্র দশ মিনিট সিজিও কমপ্লেক্সে ছিলেন প্রিয়দর্শিনী । সংশ্লিষ্ট ইডির আধিকারিক না থাকায় সামান্য সময়ের মধ্যেই গাড়িতে উঠে বেরিয়ে যান তিনি। আর কী কারণে আজ সিজিও-তে এসেছেন তা জানতে চাওয়া হলে কার্যত মেজাজ হারান মন্ত্রীর মেয়ে। সাংবাদিকদের রীতিমত ধাক্কা দিয়েই সটান গাড়িতে উঠে পড়েন।
আরও পড়ুনঃ জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতারের পর ইডির ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন মন্ত্রী পিএ
ইডি সূত্রের খবর, ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার শাখায় রয়েছে প্রিয়দর্শিনীর অ্যাকাউন্ট। পেশায় প্রিয়দর্শিনী কলেজের সহকারী অধ্যাপক। যদিও তাঁর আয়ের সঙ্গে ব্যাঙ্কে থাকা টাকার কোনওরকম সংগতি নেই। আয়কর রিটার্নের নথি খতিয়ে দেখে ইডি জানতে পেরেছে, ২০১৬ সালে প্রিয়দর্শিনীর অ্যাকাউন্টে ৩ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা জমা পড়েছে। এই প্রসঙ্গে প্রিয়দর্শিনী জানান, তিনি এই টাকা টিউশন পড়িয়ে আয় করেছেন। এই গোটা বিষয়ে ধোয়াঁশা কাটাতেই ইডির তরফে বেশ কিছু নথি চাওয়া হয়েছিল।
কয়েক মাস আগেই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সচিব হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কন্যা প্রিয়দর্শিনী মল্লিক। তিন বছর তিনি সচিবের দায়িত্ব সামলাবেন বলে নির্দেশিকায় জানিয়েছিল স্কুল শিক্ষা দফতর। এর আগে আশুতোষ কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পদে ছিলেন প্রিয়দর্শিনী।
রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডির জালে জড়িয়েছেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। গত শুক্রবার সল্টলেকের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছেন ইডি আধিকারিকেরা। এই দুর্নীতির পরিপ্রেক্ষিতে তল্লাশি অভিযান চলে ১১টি চাল কলে। সেখান থেকেই নাকি জানা গিয়েছে, একাধিক ভুয়ো কোম্পানির মাধ্যমে রেশনের টাকা নয়-ছয় হয়েছে। ইডির দাবি, সেই সব ভুয়ো সংস্থা নিজের স্ত্রী, পরিবারের সদস্য এবং বাকিবুরের মতো ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমে চালাতেন জ্যোতিপ্রিয়। মোট ৯৫ কোটি টাকা তছরুপ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ইডি সূত্রে। জ্যোতিপ্রিয়র পারিবারিক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। বালুর স্ত্রী এবং মেয়ের উপার্জনের ওপরও নজর রয়েছে তদন্তকারীদের।