এই গ্রামে আজও পুজিত হয় কাঠের চেয়ার, কেন? নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর স্পর্শে সেই কাঠের চেয়ার আজও দেবজ্ঞানে পুজো পেয়ে আসছে বাঁকুড়ার গ্রামে। প্রত্যন্ত এই গ্রামে আজও অমলিন নেতাজির স্মৃতি। নেতাজির স্পর্শ পাওয়া ওই কাঠের চেয়ার নিজের মাথায় করে দেশুড়িয়া গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন চিকিৎসক রামরুপ কর্মকার। তারপর থেকে সেই চেয়ার আজও রামরুপবাবুর বাড়িতে ঠাকুর ঘরে সযত্নে রক্ষিত রয়েছে। সেখানে অন্যান্য দেবতার সঙ্গে ওই চেয়ারে নেতাজির ছবি রেখে নিত্য পূজার্চনা করা হয়।
নেতাজির স্পর্শ পেয়ে চেয়ারও পূজিত হচ্ছে। আর এখানেই শেষ নয় নেতাজিকে নিয়ে বাঁকুড়ার গ্রামের উৎসাহ ও উদ্দীপনার। গঙ্গাজলঘাটির সভা শেষে দেশুড়িয়া হয়ে বেলিয়াতোড়ের পথে রওনা দেন নেতাজি। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু তাঁদের গ্রামের পথ দিয়ে যাবেন এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয় বিড়রা গ্রামের মানুষ তাঁকে একটিবার চোখের দেখা দেখতে ও তাঁর মুখে কিছু কথা শুনতে রাস্তার দু’পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে পড়েন। কেউ কেউ আবার শুয়ে পড়েন রাস্তার উপর।
এই অবস্থায় বাঁকুড়ার বিড়রা গ্রামের বটতলায় হুডখোলা গাড়ি থেকে নেমে মিনিট পাঁচ-সাত বক্তব্য রাখেন নেতাজি সুভাষ। আর ওই ঘটনার সাক্ষী ছিলেন রামহরিপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ননীগোপাল রায়। তখন তাঁর বয়স ছিল ছয়। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বিড়রা গ্রামের যে জায়গায় দাঁড়িয়ে বক্তব্য রেখেছিলেন ঠিক সেই জায়গাতেই রামহরিপুর রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পাদক স্বামী বামানন্দ মহারাজের প্রেরণায় ও গ্রামবাসীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তাঁর আবক্ষ মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন – এবার নয়া দুর্নীতি নিয়ে বোমা ফাটালেন দিলীপ ঘোষ, কি সেই দুর্নীতি
প্রতি বছর যথাযোগ্য মর্যাদায় স্থানীয় ক্লাবের পক্ষ থেকে নেতাজির জন্মজয়ন্তী পালিত হয় সেখানে। উল্লেখ্য, সালটা ছিল ১৯৪০। ওই বছরেরই ২৮ এপ্রিল রবিবার বাঁকুড়ায় আসেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত গ্রাম গঙ্গাজলঘাটিতে এক সভায় বক্তব্য রাখতেই তাঁর আসা। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে সভামঞ্চে অন্যান্য নেতাদের জন্য কাঠের সাধারণ চেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, আর জননায়ক নেতাজির জন্য একটি বিশেষ সোফার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।