সুন্দরবনে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের স্থায়ী ঘর নেই, রাস্তায় খোলা আকাশের নিচেই বেড়ে উঠছে আগামীর ভবিষ্যৎ

স্কুল আছে তবে সেই স্কুলের কোন ভবন নেই। খোলা আকাশের নীচে শিশুদের নিয়ে চলছে পড়াশোনা। ছবিটি বসিরহাটের সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েতের পূর্ব মামুদপুর গ্রামের ৭নং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের। রাস্তার পাশে কোনক্রমে একটি ত্রিপল ঝোলানো আছে সেখানে চলছে রান্না। আর ত্রিপলের বাইরে রাস্তার পাশে খোলা আকাশের নিচে বাচ্চাদের নিয়ে পড়ান দিদিমনি। শীত, বর্ষা বা গ্রীষ্ম কালে চূড়ান্ত সমস্যায় পড়েন শিক্ষিকা বাচ্চাদের পড়াতে। যেখানে যেন কোন খেয়ালই নেই প্রশাসনের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরে নারকেলতলা থেকে মামুদপুর খেয়াঘাট যাওয়ার রাস্তার পাশে পূর্ব মামুদপুর গ্রামে একটি ত্রিপল ঝুলিয়ে তার নিচে চলছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। ত্রিপলের নিচে রান্না করা হয় ও জ্বালানীও রাখা থাকে। গ্রীষ্মকালের তীব্র দাবদাহের মধ্যেও বাচ্চারা যেমন সেখানে পড়াশোনা করেন। আবার বর্ষাকালে বৃষ্টির সঙ্গে থাকে সাপ, ব্যাঙ্গ ও নানান পোকামাকড়ের উৎপাত। পাশাপাশি রাস্তার পাশেই পড়াশোনা করায় দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার একটা আতঙ্ক থাকে। যখন তখন যে কোন গাড়ি এসে শিক্ষিকা সহ বাচ্চাদের ধাক্কা মারতে পারে। অন্যদিকে অটো-টোটো বা বাইক গেলে রাস্তা দিয়ে যে ধুলো ওড়ে সেই ধুলো গিয়ে পড়ে রান্নায়। যার ফলে পেটের সমস্যাতেও ভোগেন কচিকাঁচারা। এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী বলেন, “যেখানে সরকার বলছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে। সেখানে রাস্তার পাশে ধুলো ও খোলা আকাশের নীচে জীবাণুযুক্ত খাবার খেলে বাচ্চারা তো অসুস্থ হবেই।” এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ৪২ জন ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে। এই কেন্দ্রে কোন ঘর নেই। সেজন্য বাচ্চাদের সেখানে পাঠাতে অনীহা দেখা যায় অভিভাবকদের মধ‍্যেও। এলাকাবাসীদের অনেকেই জানান, পড়াশোনার পরিকাঠামো নেই সেজন্য শুধুমাত্র বাচ্চাদের বরাদ্দ খাবার নিতে যান অনেকে। রাস্তার পাশে খোলা আকাশের নিচে বাচ্চাদের পাঠাতে সাহস পান না অভিভাবকরা। এ বিষয়ে হিঙ্গলগঞ্জের উপপ্রধান আব্দুল লতিফ গাজী বলেন, “স্থানীয় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দূরবস্থার কথা আমরা শুনেছি। দ্রুত এর সুরাহা করবো।” তবে প্রত‍্যন্ত সুন্দরবনের এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের এই বেহাল অবস্থা কবে ফিরবে তা নিয়ে আশায় এলাকার সাধারণ মানুষ।

সুন্দরবনে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের স্থায়ী ঘর নেই, রাস্তায় খোলা আকাশের নিচেই বেড়ে উঠছে আগামীর ভবিষ্যৎ