কেটে গেছে দুরাত। এখনও রাজভবনের সামনে চলছে অভিষেকের নেতৃত্বে ধর্ণা। রাজ্যপালের সঙ্গে না সাক্ষাত করে এই ধর্ণা তুলবে না বলিয়ে জানিয়েছেন অভিষেক। ওদিকে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে ২ তারিখ এবং ৩ তারিখ দিল্লিতে তৃণমূলের ধর্না ঘিরে তুলকালাম পরিস্থিতি তৈরি হয়। আটক করা হয় অভিষেকদের। এদিন সেই প্রসঙ্গ তুলেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তীব্র কটাক্ষ করে বললেন,”ভারত সরকার লুঠেরাদের টাকা দিতে চায় না।”
আরও পড়ুনঃ ‘পালিয়ে বেড়াচ্ছেন’ অভিযোগ তুলে উত্তরবঙ্গে কালো পতাকা দেখানো হল রাজ্যপালকে
শুভেন্দু বলেন, ”আবাস যোজনায় বঞ্চিত লক্ষাধিক লোক নিয়ে পুজোর পরে জমায়েত হবে। ২১ জুলাই বলেছিলেন টাকা নেবেন না, এখন কাঁদুনি গাইছেন। ভারত সরকার লুঠেরাদের টাকা দিতে চায় না। মুখ্যমন্ত্রী ৩০১ কোটি টাকা পুজোর চাঁদা দিয়েছেন। নিশ্চয়ই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনেক টাকা আছে। তৃণমূলের মিথ্যে কথার জবাব দিতে।”
প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আবাস যোজনায় ভুরি ভুরি দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, গরিবদের বঞ্চিত করে, পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বে আত্মীয়-ঘনিষ্ঠদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার। কোথাও আবার নাম জড়িয়েছে বিজেপির। বাংলায়, প্রধানমন্ত্রীআবাস দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে চলতি বছরে রাজ্য়ে এসেছিল কেন্দ্রীয় দল (Central Team)। চলতি বছরে পূর্ব মেদিনীপুরে ভগবানপুর, খেজুরির বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা। ভগবানপুর ১ নম্বর ব্লকে, বিডিও অফিসের সামনে, বিক্ষোভের মুখেও পড়েছিলেন তাঁরা। গাড়ি ঘিরে দেখানো হয় বিক্ষোভ! কোনওক্রমে ঘেরাওমুক্ত হওয়ার পরে, কাজলাগড়, খেজুরির বেগুনাবাড়ি, ঠাকুরনগর-সহ বিভিন্ন গ্রাম পরিদর্শন করেছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল।
অন্যদিকে, ধর্না নিয়ে আগেই নিশানা করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে বিরোধী দলনেতা লিখেছিলেন, ”রাজভবনের ১৫০ মিটার পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকে, পুলিশের সঙ্গে যোগসাজশে সেখানে নিজেদের মিছিল নিয়ে ঢুকে শুধু ১৪৪ ধারা লঙ্ঘনই করেননি, সেখানে ক্যাম্পও করেছে। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের নিরাপত্তা সস্তার রাজনৈতিক নাটকের জন্য বিপন্ন হচ্ছে। আর এতে পুলিশ সহযোগিতা করছে।”
কলকাতা রাজভবনের বাইরে ধর্না-অবস্থানের মঞ্চ থেকে রাজ্যপালকে কটাক্ষ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক রাজ্যপালকে জমিদার কটাক্ষ করার পরে জানিয়েছেন, ‘ওঁকে আমার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করতেই হবে। সব চিঠি এসে পৌঁছক। ৫০ লক্ষ চিঠি নিয়ে দেখা করতে যাব। ওঁকে সেগুলো পড়ে দেখতে হবে।’ রাতভর ধর্নামঞ্চে অবস্থান চালানোর পাশাপাশি অভিষেকের বক্তব্য, ‘আপনি ৩ দিন থাকতে পারতেন, এসেই ফিরে গেলেন, রাজভবন খালি, আমরা সৌজন্য দেখিয়েছি, কিন্তু রাজ্যপালের (Governor) এই জমিদারি প্রথার বিরুদ্ধে। দিল্লিতে যা হয়েছে, তা মধ্যযুগীয় বর্বরতা, এর জবাব দেবে মানুষ’।