কেষ্টকে জেরায় এবার বিশেষ দল গড়ল ইডি, বিচারকের নির্দেশ তিন দিনের জন্য অনুব্রতকে হেফাজতে পেয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।এনামুল-সায়গলের বয়ান সামনে রেখে জেরা, ৬ সদস্যের বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছে। অনুব্রত মন্ডলকে জেরায় এবার আটঘাঁট বাঁধল ইডি , কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দলের নেতৃত্বে দুঁদে আইপিএস, ইডির স্পেশাল ডিরেক্টর সনিয়া নারাং । দিল্লি অফিসে অনুব্রত মণ্ডলকে জেরা করবেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, অনুব্রতর জন্য প্রশ্নবাণ তৈরি করেছে ইডি। যেমন, এনামুল হকের সঙ্গে পরিচয় কীভাবে? গরু পাচারে প্রোটেকশন মানি পেয়েছেন কি না? আয়ের উত্স কী? একাধিক রাইস মিল কার টাকায় কেনা? বিরাট অঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিটের উত্স কী? ইত্যাদি। জানা যাচ্ছে, গোটা জেরাপর্বের ভিডিয়ো রেকর্ডিং করা হবে।
২০১৭-১৮ সাল থেকে তাঁর ও তাঁর স্ত্রী ও কন্যার আয় কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু আয়ের উৎস সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট উল্লেখ নেই। কারণ অনুব্রত একজন রাজনৈতিক ব্যত্তিত্ব, তাঁর মেয়ে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা ও স্ত্রী গৃহবধূ। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এই আয় বাড়ল কীভাবে? সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে অনুব্রতর হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারির বয়ান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মণীশ কোঠারির কাছে অনুব্রতর রাইস মিল থেকে শুরু করে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির হিসাব রয়েছে। দেখা গিয়েছে, জমি কেনার ক্ষেত্রে বা অন্য কোনও কিছু কেনার ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা দিয়েছেন অনুব্রত। এত নগদ টাকা কোথা থেকে এল, সেটাও জানতে চাইবেন তদন্তকারীরা। অন্যের পাওয়া লটারিও নিজে মোটা টাকায় কিনে নিয়েছেন অনুব্রত, সেটা জানতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। গোটা প্রশ্নোত্তর পর্বের ভিডিয়ো রেকর্ডিং হবে।
আরও পড়ুন – টাকার ভাগ নিয়ে বচসা থেকে খুন? দেহব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন হরিদেবপুরের মৃত তরুণী!
সূত্রের খবর, অনুব্রত মণ্ডলকে জেরা করার ক্ষেত্রে ইডি-র হাতে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হল বেশ কয়েকটা স্টেটমেন্ট। এখনও পর্যন্ত এনামুল হক, সায়গল হোসেন, হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি ও আরও বেশ কয়েকজন সাক্ষীর বক্তব্যের ভিত্তিতে অনুব্রতকে প্রশ্ন করবে ইডি। সবথেকে প্রথমে যে প্রশ্নটা করা হতে পারে, তা হল এনামুল হককে কীভাবে চেনেন অনুব্রত? সিবিআই-ও আগে এই প্রশ্ন করেছিলেন। তাতে অনুব্রত মণ্ডল জবাব দিয়েছিলেন, তিনি একজন রাজনৈতিক নেতা, তাঁর কাছে বহু লোক দেখা করতে আসে, সবাই তাঁকে চেনেন, কিন্তু তিনি যে সবাইকে চিনবেন, এরকম কোনও মানে নেই। তার পরবর্তীতে দ্বিতীয় প্রশ্নটি সায়গল হোসেনের কল রেকর্ড নিয়ে। দেখা গিয়েছে, এনামুল হকের সঙ্গে ২০১৭-১৮ সালে সায়গল হোসেনের ৭৫ বার কথা হয়েছে। সেখানে দাঁড়িয়েও অনুব্রত দাবি করেছিলেন, সায়গল কথা বলতেই পারেন, কিন্তু এনামুলের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। এরপর ইডি-র হাতে বড় হাতিয়ার হল, এনামুল ও সায়গলের স্টেটমেন্ট। যেখানে তাঁরা দাবি করেছেন, সায়গলের মোবাইল ব্যবহার করে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে একাধিকবার এনামুল হকের কথা হয়েছে। এবার প্রশ্ন, তাহলে এতবার কী নিয়ে কথা হয়েছে? গরু পাচার নিয়ে কথা হয়েছে? এরপর অনুব্রত মণ্ডলের কাছ থেকে তাঁর গত পাঁচ বছরের আয়করের হিসাব চেয়ে ছিলেন তদন্তকারীরা।