সাড়ে পাঁচ ঘন্টা কেটে গেছে, এখনও ইডি দফতরে অভিষেক। বুধবার ইডি দফতরে হাজিরা দিলেন সাংসদ তথা তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আজ সকাল ১১টা ৪০ নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্সে তিনি হাজিরা দেন। তবে অভিষেককে সমন পাঠানো হলেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ নয় আদালতে আশ্বাস দিয়েছে ইডি। কিছু তথ্য জানার জন্যই সমন করা হয়েছে তৃণমূল সাংসদকে মন্তব্য ইডি-র আইনজীবীর।
বিচারাধীন মামলায় পদক্ষেপ না করার পরামর্শ বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের। রক্ষাকবচ পেলেও আজ হাজিরায় যেতে হবে অভিষেককে। কিন্তু ‘ইন্ডিয়া’ বৈঠকের দিনই কেন তলব? তৃণমূলের এই প্রশ্নেই সরগরম রাজ্য-রাজনীতি।
আরও পড়ুনঃ স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদ পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
এক নজরে আপডেট
- আজ দুপুর ১২টা নাগাদ জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব শুরু হবে সিজিও কমপ্লেক্সের পাঁচতলায় ইডি-র দফতরে। উপস্থিত থাকবেন দু’জন অ্যাসিস্টেন্ট পদমর্যাদার অফিসার। এই ঘরে ভিডিয়ো রেকর্ডিং হবে। ৫০ পিএমএলএ আইন অনুযায়ী এই বয়ান রেকর্ড করা হবে। অভিষেক নিজেই তাঁর বয়ান লিখবেন।
- ঘড়ির কাঁটায় তখন ১১টা। কালীঘাট থেকে কালো গাড়িতে চড়ে সিজিও-র উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
- এর পাশাপাশি সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের কোনও কার্যকলাপ নিয়ে অভিষেকের সন্দেহ ছিল কি না সেই বিষয়ও প্রশ্ন করতে পারেন গোয়েন্দারা। শুধু তাই নয়, ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের’ সিওও পদে থাকাকালীন তিনি কোনও বেআইনি কর্মকান্ড করেছেন কি না তাও জানতে চাওয়া হতে পারে।
- ইডি সূত্রে খবর, ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ড’ খাতায় কলমে জানিয়েছে তাঁদের সংস্থা প্যাকেজ ড্রিঙ্কিং ওয়াটার সাপ্লাইয়ের সঙ্গে যুক্ত। ফলত, গোয়েন্দাদের প্রশ্ন থাকতে পারে কবে থেকে জলের ব্যবসা শুরু করেছে এই কোম্পানি? সেই জল কোথায়-কোথায় কাদের কাছে সরবরাহ হয়। শুধু তাই নয়, এই সংস্থার বার্ষিক আয় কত, কোথাও ঋণ রয়েছে কি না, টাকার উত্সই বা কী? আজ এই সমস্ত তথ্য়ই অভিষেকের কাছে জানতে চাইতে পারেন ইডি আধিকারিকরা।
- আজ আদালতে মৌখিক রক্ষাকবচ নিয়ে ইডি দফতরে আসবেন তৃণমূল সাংসদ। ইডি সূত্রে খবর, তাঁকে মূলত প্রশ্ন করা হতে পারে ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ড’ নিয়ে। যেহেতু তিনি নিজেই ওই সংস্থাকে ‘আমার কোম্পানি’ হিসাবে দাবি করেছিলেন, সেই কারণে ইডি আধিকারিকরা তাঁর কাছ থেকে জানতে চান এই সংস্থার কোন কোন বিষয় দেখাশোনা করতেন অভিষেক।
- একপক্ষের গলায় যখন প্রতিহিংসা, ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব। তখন আর এক পক্ষ সরব, ‘দুর্নীতির জবাব চাই, শাস্তি চাই’ এই স্লোগান তুলে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের নম্বর টু আর তাঁকে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তলবের লিস্টটা কিন্তু ছোটখাটো নয় মোটেও। ‘তিনি কারও বাবার চাকর নন। যতবার ডাকবে, ততবারই যেতে হবে নাকি?’ এহেন ক্ষোভের বিস্ফোরণও কিছুদিন আগে দেখা গিয়েছিল, খোদ অভিষেকের গলাতেই। পঞ্চায়েত ভোটপর্বে বারবার তলব করা হয়। গিয়েছিলেন একবার। তারপর আর না।
- এবার তেরোই সেপ্টেম্বর ডাক পড়ল তাঁর। এমন একটা দিন যখন দিল্লিতে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের কো-অর্ডিনেশন কমিটির প্রথম বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেছেন, “অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচার যাত্রাকে ভঙ্গ করে তাঁকে বিব্রত করার চেষ্টা। অপরদিকে, বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেছেন যে উনি কি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে ওনার টাইম টেবিল দেখে সমন পাঠানো হবে?
- সবটাই অভিষেককে হয়রান করার উদ্দেশ্যে, খোদ মুখ্যমন্ত্রীর গলাতেও শোনা গিয়েছে এ অভিযোগ। মমতা বলেছেন, “অভিষেককে সারাক্ষণ বিরক্ত করা হচ্ছে। অকারণ হেনস্থা করা হচ্ছে। কোনও প্রমাণ নেই।”
- রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, ষড়যন্ত্রের অভিযোগে রাজ্য রাজনীতিতে তুলকালাম চরমে। বিজেপি বিরোধী জোটকে ভয় পেয়েছে বলেই, কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহার করে এই তলবের রাজনীতি, দাবি তৃণমূলের। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “ভয় দেখানোর কথা বলছে। কিন্তু অভিষেকের ডিএনএ-তে ভয় বলে কোনও বস্তু নেই।”
- সূত্রের খবর, এ যাত্রা নোটিস মেনে হাজিরা দিতে যাচ্ছেন অভিষেক দিল্লি-যাত্রা দূরে ঠেলে। তবে তিনি তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে (টুইটার) রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগে ইতিমধ্যে সুর চড়িয়েছেন। লিখেছেন, “ইন্ডিয়ার সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠক ১৩ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে। যে কমিটির আমিও এক জন সদস্য। কিন্তু ইডি ওই দিনই আমাকে হাজিরা দেওয়ার জন্য নোটিস দিয়েছে। এই মাত্র সেই নোটিস পেলাম। ৫৬ ইঞ্চি ছাতির কাপুরুষতা ও অন্তঃসারশূন্যতা দেখে বিস্মিত না হয়ে পারছি না।”