নিয়োগী বাড়ির পুজোর ইতিহাস

নিয়োগী বাড়ির পুজোর ইতিহাস । বীরভূমে পাইকর গ্রামের আনাচে কানাচে দেবদেবীর ইতিহাস জড়িত। এই গ্রামের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে পাগলা নদী আর এই নদীকে ঘিরে দৈবিক ইতিহাস রয়েছে প্রচুর। এই গ্রামের মা সিদ্বেশ্বরী হলেন মা দুর্গা । ৯০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই পুজো হয়ে আসছে। মূলত এটি নিয়োগী বাড়ির পুজো। কিন্তু গ্রামের সকলেই এই পুজোর সাথে বিশেষ ভাবে জড়িত। এই পুজোর কাহিনী জানলে আপনি হয়তো বিশ্বাস করতে পারবেন না।

 

একদা নিয়োগী বাড়ি, হাজরা বাড়ি, কায়স্থ বাড়ি মিলে দুর্গা পুজোর আয়োজন করতে চেয়েছিলেন এবং সেই মতো কামরূপ-কামাক্ষা যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। কথিত আছে, তারা চেয়েছিলেন কামরূপ কামাক্ষাতে পুজো দিয়ে এসে তারপর থেকে তারা দুর্গা পুজোর আয়োজন শুরু করবেন। তখন পায়ে হেঁটে যাত্রায় একমাত্র উপায়। যাত্রাপথে তিন বন্ধু মিলে বিশ্রামের জন্য বসেছিলেন গ্রামের শেষ প্রান্তে কালু বালু মাতার(কালী ঠাকুর) মন্দিরে। তারা চেয়েছিলেন খিচুড়ি রান্না করতে সেই মতো আয়োজন শুরু করেছিলেন তাদের কাছে থাকা উপকরণ দিয়ে।

আরও পড়ুন – ভাষা সমস্যায় পথহারা তেলেঙ্গানার এক অসহায় ব্যক্তিকে ঘরে ফিরিয়ে নজীর

এমন সময় একজন বৃদ্ধা হঠাৎ করেই তাদের কাছে আসেন এবং বলেন, ‘আমি ক্ষুধার্ত আমাকে কিছু খেতে দাও’। নিয়োগী বাড়ির ভদ্রলোক তাঁকে খেতে দিতে রাজি হলেও কায়স্থ বাড়ির লোকটি একেবারেই রাজি হননি পরে সেই বৃদ্ধাকে খাবার দেওয়া হয়। ঠিক সেই সময় বৃদ্ধা মা দুর্গার রূপ নেন এবং তাদের বলেন ‘তোদের কামাক্ষা যেতে হবে না , তোরা এখানেই (পাইকর) পুজো কর’। সেই উপদেশ মেনেই আজও নিয়োগী বাড়িতে দুর্গা পুজো হয় ।

 

এক চালায় এই ঠাকুর বিরাজ মান। উল্লেখযোগ্য হল নবমীর দিন মায়ের পায়ে ফুল চাপানো হয় এবং অপেক্ষা করা হয় এই ফুল কখন পড়বে মায়ের পা থেকে। পুরোহিত করজোড়ে অপেক্ষা করেন ফুল পড়ার মুহূর্তের জন্য। কথিত আছে মায়ের বেদীর নিচে রয়েছে কঙ্কালের মাথা। একবার মায়ের গয়না চুরি করার জন্যে ডাকাত পড়েছিল নিয়োগী বাড়িতে। সেই সময় মা নিজেই ডাকাতদের মেরে তাঁর বেদীর নিচে পুঁতে দিয়েছিলেন।