আজই রাজধানীর উদ্দেশ্যে রওনা দেবে তৃনমূল। ট্রেন না পাওয়ার অবশেষে বাসে করেই দিল্লি যাত্রা করবেন তারা। আগামী ২ ও ৩ তারিখ দিল্লির ধর্ণামঞ্চে প্রতিবাদ মিছিল করবে রাজ্যের শাসক দল। বাংলার বিরুদ্ধে বঞ্চনার প্রতিবাদে এই আন্দোলন। ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা না দেওয়া থেকে শুরু করে আরও বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ। আর তৃণমূলের এই দিল্লি কর্মসূচির মধ্যেই আগামী ৩ অক্টোবর মঙ্গলবার তাঁকে তলব করেছে ইডি। সে কথা শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টেও জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি। তার পর বিচারপতি অমৃতা সিনহা জানিয়েছেন, ৩ তারিখের তদন্ত প্রক্রিয়া যেন ব্যাহত না হয়, তা যেন নিশ্চিত করে ইডি।
আরও পড়ুনঃ বাসে করে তৃণমূলের দিল্লি যাত্রা নিয়ে কটাক্ষ লকেটের
কিন্তু শুক্রবার অভিষেক বন্দোপাধ্যায় নিজের এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছিলেন তিনি ৩ তারিখ যাবেন না ইডি দফতরে। এরপর শনিবারও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পষ্টাপষ্টি বুঝিয়ে দিলেন বাংলার বিরুদ্ধে বঞ্চনার প্রতিবাদে তিনি যে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন তা থেকে পিছপা হওয়ার প্রশ্ন নেই। ৩ অক্টোবর বঞ্চিতদের তিনি নিয়ে যাবেন যন্তর মন্তরে। তার পর সেখান থেকে এমন গর্জন হবে যাতে কানের মধ্যে দিয়ে তা মরমে প্রবেশ করে মোদী সরকারের।
সংসদ ভবনের অদূরে যন্তর মন্তর হল ধর্নাস্থল। কলকাতায় যেমন রানী রাসমনি অ্যাভেনিউ, তেমনই লুটিয়েন দিল্লিতে যন্তর মন্তর হল রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক আন্দোলনের ধর্না ক্ষেত্র। অতীতে বহু আন্দোলনের সাক্ষী এই যন্তর মন্তর। কেন্দ্রের অর্থনৈতিক অবরোধের বিরুদ্ধে তৃণমূল ৩ অক্টোবর সেখানে সভা করার অনুমতি চেয়েছে দিল্লি পুলিশের কাছে। শনিবার সমাজ মাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় অভিষেক আরও বলেছেন,“যাঁরা দিল্লি যেতে পারলেন না, তাঁরা যাতে নিজেদের এলাকায় বসেই দিল্লির এই কর্মসূচি যাতে দেখতে পান, দলের তরফে সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে”।
২ অক্টোবর দিল্লির রাজঘাটে যেমন তৃণমূল নীরব প্রতিবাদ জানাবে, তেমনই বাংলায় প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল নেতারা মোমবাতি মিছিল করবেন। নাম না করে প্রধানমন্ত্রী মোদীর উদ্দেশে অভিষেক এদিন বলেন, “রেল আটকে, ট্রেন বাতিল করে, ইডি, সিবিআইকে দিয়ে চিঠি লিখে তৃণমূলের আন্দোলন ভাঙবেন ভাবলে মুর্খের স্বর্গে বাস করছেন। তৃণমূল ঘাসফুলের দল, যত কাটবেন তত বাড়বে। ক্ষমতা থাকলে স্পর্শ করে দেখাক।” একই সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, “কারও ক্ষমতা থাকলে আন্দোলন আটকে দেখাক। একটা গরিব মানুষের গায়ে যদি হাত পড়ে, ইটের জবাব পাথরে কীভাবে দিতে হয়, গণতান্ত্রিক উপায়ে বংলার মানুষ দেবে।”
একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকেই দিল্লি চলো অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন অভিষেক। এদিন তিনি জানান, আমরা চেয়েছিলাম বাংলা থেকে ১ লক্ষ লোক নিয়ে যেতে। তাঁদের থাকা খাওয়ার জন্য চারদিনের জন্য রামলীলা ময়দান চেয়েছিলাম, কিন্তু ওরা দেয়নি। বাংলার গরিব মানুষকে নিয়ে যাওয়ার জন্য রেলের কাছে ট্রেন চেয়েছিলাম। ডিপোজিট নেওয়ার পরও ট্রেন বাতিল করল।
রাজ্যের অভিযোগ, ১০০ দিনের প্রকল্প, রাস্তা, বাড়ি সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বাংলার ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। বারে বারে আবেদন নিবেদন করেও সেই টাকা মেলেনি। অভিষেক এদিন বলেন, “একুশের ভোটে হেরে বাংলাকে শাস্তি দিতে এসব করছে। একুশে যেমন বাংলার মানুষ জবাব দিয়েছিল, আগামী দিনে আরও জোরালো জবাব দেবে। বোতাম টিপে আপনি বাংলার টাকা আটকে রাখবেন, বোতাম টিপে গণতান্ত্রিকভাবেই মানুষ আপনাদের সরকার থেকেও উৎখাত করবে।”