দুর্গাপুজোর মণ্ডম তৈরির জন্য গাছ কাটলে এবার কড়া পদক্ষেপ কলকাতা পুরসভার

দুর্গাপুজোর মণ্ডম তৈরির জন্য গাছ কাটলে এবার কড়া পদক্ষেপ কলকাতা পুরসভার

দরজায় কড়া নাড়ছে বাঙালির শ্রেষ্ট উৎসব দুর্গাপুজো। আর দুর্গাপুজোর মণ্ডপ তৈরি করতে গিয়ে গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে বলে প্রায়ই অভিযোগ আসছে কলকাতা পুরসভায়। এর এবার এই অভিযোগের বিরুদ্ধে এ বার কড়া পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সোমবার দুর্গাপুজো উপলক্ষে বিভিন্ন সরকারি দফতরের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘দেবা বলছিল, ক্লাবগুলো গাছ কেটে দিচ্ছে। আমি স্পষ্ট বলছি, কোনও মতেই গাছ কাটা যাবে না। গাছ কাটলেই এফআইআর করতে হবে।’’

 

দুর্গাপুজো আর মাসখানেকের একটু বেশি বাকি। উৎসবের দিনগুলিতে পুরসভার যাবতীয় পরিষেবা যাতে স্বাভাবিক থাকে, তার জন্য এ দিন রাজ্য ও কেন্দ্রের একাধিক দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মেয়র। পুজোর হোর্ডিং বসানো বা মণ্ডপ তৈরির জন্য গাছ কাটার অভিযোগ প্রসঙ্গে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘হোর্ডিং বসানোর নামে সবুজ যাতে ধ্বংস করা না হয়, সে বিষয়ে পুরসভার উদ্যান বিভাগকে সজাগ থাকতে হবে। অভিযোগ পেলেই থানায় এফআইআর করতে হবে।’’ মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার জানান, তাঁর রাসবিহারী বিধানসভা কেন্দ্র এলাকায় পুজোর বাঁশ গাছের সঙ্গে বেঁধে এমন ভাবে পোঁতা হয়েছে যে, তাতে গাছের ক্ষতি হতে পারে। তিনি বলেন, ‘‘গাছের কোনও রকম ক্ষতি যাতে না হয়, সে বিষয়ে বরো ইঞ্জিনিয়ারদের সতর্ক করেছি।’’

আরও পড়ুনঃ ঝালদা-রানিনগর আবহে এবার অধীরকে খোঁচা ফিরহাদের

পুজোর মুখে শহরের বহু রাস্তার হাল যে অত্যন্ত খারাপ, তা স্বীকার করে মেয়র এ দিনের বৈঠকে পুরসভার রাস্তা বিভাগের আধিকারিকদের বলেন, ‘‘শহরের একাধিক রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। রাস্তা সংস্কারের কাজে আর দেরি করা যাবে না। টেন্ডার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে হবে।’’ বেহাল রাস্তার পাশাপাশি শহরের অনেক বাতিস্তম্ভের নীচে এখনও ঢাকনাবিহীন ফিডার বক্স থাকায় পুরসভার আলো বিভাগকে সতর্ক করেন মেয়র। অতীতে বৃষ্টির সময়ে বাতিস্তম্ভে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সেই সমস্ত ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কলকাতা পুরসভা এলাকার প্রতিটি বাতিস্তম্ভ কী অবস্থায় রয়েছে, তা পরীক্ষা করতে আগেই বলেছিলাম কলকাতা পুলিশ, কলকাতা পুরসভা ও সিইএসসি-কে। এখনও আমি রাস্তায় ঢাকনাবিহীন বাতিস্তম্ভ দেখলে আলো বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের ফোন করি। বৃষ্টির সময়ে কোনও বিপদ বা দুর্ঘটনা ঘটলে সিইএসসি, পুরসভা একে অপরের উপরে দায় চাপায়। কিন্তু বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কারও মৃত্যু হলে যাঁর গেল, তাঁর তো গেলই। এই ধরনের দুর্ঘটনা ঠেকাতে আমাদের সবাইকে আগে থেকে সতর্ক থাকতে হবে।’’

 

এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত পুলিশকর্তাদের দেবাশিস কুমার জানান, পুজোর মরসুমে শহরে
অবৈধ পার্কিংয়ের সংখ্যা খুবই বেড়ে যায়। পার্কিংয়ের নাম করে টাকা তোলা হয়। এই প্রবণতা ঠেকাতে কলকাতা পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন তিনি।
পাশাপাশি তাঁর আরও অভিযোগ, গত দশ দিনে রাসবিহারী এলাকায় ১২টা ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি হয়ে গিয়েছে। সিসি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও চুরি বন্ধ হচ্ছে না। ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি বন্ধ করতে পুলিশের কর্তাদের কঠোর পদক্ষেপ করতে বলেন তিনি। বৈঠকে কলকাতা পুরসভা, কলকাতা পুলিশ ছাড়াও পরিবহণ, কেএমডিএ, পূর্ত, সেচ, সিইএসসি, দমকল, কলকাতা বন্দর, পূর্ব রেলের কর্তারা উপস্থিত ছিলেন।