স্বামীর ছবিকে সামনে নিয়ে এখনও কাঁদেন নোট বন্দির লাইনে দাঁড়ানো মৃতের স্ত্রী

স্বামীর ছবিকে সামনে নিয়ে এখনও কাঁদেন নোট বন্দির লাইনে দাঁড়ানো মৃতের স্ত্রী। নোট বন্দির ফলে একটি রাষ্ট্রীয়ত্ব ব্যাঙ্কের থেকে টাকা তুলতে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল দিনহাটার সাতকুরা এলাকার শিক্ষক ধরণীকান্ত ভৌমিকের। তারপর থেকে স্বামীর ছবি নিয়ে আজও সেই দিনটির কথা মনে রেখে কাঁদেন স্ত্রী সবিতা ভৌমিক। কেন্দ্রের মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্তে স্বামীর মৃত্যু হলেও দেশের সর্বোচ্চ আদালত ওই সিদ্ধান্তকে মান্যতা দেয়।

 

আদালতের এই রায়কে দেশের স্বার্থে সাধুবাদ জানালেও আজও পরিবার সরকারি কোন সাহায্য না পাওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে ধরনের স্ত্রী সবিতা ভৌমিক, মেয়ে শ্রাবণী ভৌমিকের। প্রসঙ্গত,২০১৬ সালের ১৪ ই নভেম্বর দিনহাটার স্টেট ব্যাংকের সামনে টাকার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন ধরণী কান্ত ভৌমিক। এরপর তার মৃত্যু হয়। আজও সেই দিনটি দিনহাটার ভৌমিক পরিবার ভুলতে পারেনি। এখনও স্বামীর ছবিকে সামনে নিয়ে ডুকরে ডুকরে কেঁদে চলছেন সবিতা।

 

ধরণী কান্তের মেয়ে শ্রাবণী ভৌমিক জানান, নোট বন্দির সময় বাবার মৃত্যু কোনভাবেই আজও মেনে নিতে পারছি না। সেই সময়টা খুবই কঠিন ছিল। বাবা চলে গেল। ভাই ছোট ছিল। আমি ও ভাই দুজনেই পড়াশোনা করতাম। নোট বন্দির কারণে আমরা আমাদের বাবাকে হারিয়েছি। সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তকে মান্যতা দিয়েছে ঠিকই। তবে নোট বন্দির কারণে যাদের মৃত্যু হয়েছে সেই পরিবার গুলির পাশে যদি দাঁড়াতো কেন্দ্রীয় সরকার তাহলে আমাদের অনেকটাই উপকার হত।

 

সোমবার দিনহাটা শহরের দুই নম্বর ওয়ার্ডে নিজের বাড়িতে বসে সাংবাদিকদের কাছে নোট বন্দি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সেদিনের সিদ্ধান্তকে সুপ্রিমকোর্ট মান্যতা দেওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। এরপরেই সবিতা জানান,২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় সরকার দেশের স্বার্থে নোটবন্দির সিদ্ধান্ত নেয়। সে সময় ব্যাংকের লাইনে গিয়ে টাকা তুলতে গিয়ে তার স্বামীর মৃত্যু হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের সেই সিদ্ধান্তকে সুপ্রিম কোর্ট মান্যতা দিলেও সরকার যদি একটু আমাদের পাশে দাঁড়াতো তাহলে আরও বেশি ভালো লাগতো।

আরও পড়ুন –  পঞ্চায়েত ( Panchayats ), টিকিট মহার্ঘ, জ্বলছে আগুন, অভিষেক তৎপর, আইপাকের বড় দায়িত্ব

তাহলে কষ্ট অনেকটাই কমে আসত।স্বামীর মৃত্যুর পর তিন বছর খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে কাটাতে হয়েছে। এক ছেলে এবং মেয়ে পড়াশোনা করত। বাড়ি ভাড়া দিতে পারছিলাম না। সে সময় বাড়িওয়ালাও আমাদের বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেন। স্বামী চলে যাওয়ার পর ওই সময় তখন মাথার উপর যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছিল। কয়েক মাস আগে ছেলে শৈবালের স্কুলে ক্লার্কের চাকরি হওয়ায় কিছুটা রক্ষা হয়েছে আমাদের।