আর্থিক সুবিধা নিতেন মহুয়া মিত্র, দাবি ওই ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর, পাল্টা সাংসদ

আরও বিপাকে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মিত্র। এবার যে ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র কিছু নির্দিষ্ট প্রশ্ন তুলেছিলেন বলে অভিযোগ করেছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে–সেই ব্যবসায়ী গোষ্ঠী হলফনামায় দাবি করেছে, তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা নিয়েছিলেন মহুয়া। এমনকী মহুয়া তাঁর পার্লামেন্টারি লগ-ইন আইডিও ওই ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে দিয়েছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে তাদের হলফনামায়।

আরও পড়ুন: ফের চর্চায় কাঞ্চন-শ্রীময়ী

আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন সংসদে তোলার উদ্দেশ্যেই এই লগ-ইন আইডি তাদের দেওয়া হয়েছিল বলেও দাবি ওই ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর। যদিও এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন মহুয়া। কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘ওই ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে সিবিআই বা সংসদের এথিক্স কমিটি কেউই ডাকেনি। তাঁরা কেন নিজের থেকে এই হলফনামা দিতে যাবেন?’ মহুয়ার অভিযোগের তির সরাসরি প্রধানমন্ত্রী মোদীর দিকেই।

 

সংবাদ মাধ্যমে সাংসদ বলেন, ‘মোদী ওই ব্যবসায়ী ও তাঁর বাবার ব্যবসা বন্ধের ভয় দেখিয়েছেন। প্রতিটি রাজ্যেই তাদের বড় বিনিয়োগ আছে। বিজেপি যে কোনও মূল্যে আমাকে আটকাতে চায়। তাই তাঁদের জোর করে এটা লেখানো হয়েছে।’ তৃণমূলের সংসদীয় নেতৃত্ব অবশ্য এই বিতর্কে এখনও কোনও মন্তব্য করেননি। গোড্ডার বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে মহুয়ার বিরুদ্ধে লোকসভার অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ করার আগেই অবশ্য আইনজীবী তথা মহুয়ার প্রাক্তন বন্ধু জয় অনন্ত দেহাদরি সিবিআইয়ের অধিকর্তাকে চিঠি লিখে একই অভিযোগ করেছিলেন।

 

একটি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে ২০১৯-২৩ এর মধ্যে আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে মহুয়া সংসদে ৫০টির বেশি প্রশ্ন তুলেছিলেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি ইতিমধ্যেই সংসদের এথিক্স কমিটির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। এই অভিযোগ প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছেন মহুয়া। পাল্টা নিশিকান্ত ও দেহাদরির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হয়েছে মহুয়ার তরফে। এই বিতর্কের মধ্যে ওই ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর এই হলফনামা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন আইনজ্ঞরা। দিল্লিতে তাঁর সরকারি বাংলোর রেনোভেশন থেকে শুরু করে ডোমেস্টিক ও ইন্টারন্যাশনাল বিমানযাত্রার খরচ-সহ অনেক রকম সুবিধা, দামি উপহার-সহ বিভিন্ন দাবি তাদের কাছে মহুয়া করেছিলেন বলেও হলফনামায় উল্লেখ করেছে ওই ব্যবসায়ী গোষ্ঠী।

 

এই বিতর্কের মধ্যে আবার মহুয়া মৈত্র ও তাঁর প্রাক্তন বন্ধু তথা আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদরির মধ্যে টানাপড়েন আরও তীব্র হলো। বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে দেহাদরি দাবি করেছেন, তাঁর প্রাক্তন বান্ধবী মহুয়া মৈত্র তাঁর রটহুইলার গোত্রের একটি পোষা কুকুরকে ‘অপহরণ’ করেছেন এবং বেআইনিভাবে নিজের কাছে আটকে রেখে দিয়েছেন। আবার দেহাদরির বিরুদ্ধে আগেই একই ধরনের অভিযোগ এনেছেন মহুয়া। তাঁর পাঠানো আইনি নোটিসে অভিযোগ করা হয়েছিল, ব্যক্তিগত কারণে তাঁদের বন্ধুত্ব ভেঙে যাওয়ার পরে দেহাদরি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওঠেন।

 

তিনি মহুয়াকে বার বার হুমকি দিয়েছেন। এমনকী সাংসদ হিসাবে পাওয়া দিল্লিতে মহুয়ার বাংলোয় ঢুকে পড়ে দেহাদরি অনেক ব্যক্তিগত জিনিস চুরি করেছেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে নোটিসে। সেখানে পোষ্য সারমেয় ‘হেনরি’কে নিয়ে যাওয়ারও অভিযোগ করা হয়। যদিও পরে মহুয়া তা ফেরত পান।

en.wikipedia.org