পিরিয়ডের সময় দুর্বলভাব, ঘরোয়া উপায়ে মিলবে এর থেকে স্বস্তি, জানুন

পিরিয়ডের সময় দুর্বলভাব, ঘরোয়া উপায়ে মিলবে এর থেকে স্বস্তি, জানুন

পিরিয়ড, যেটা প্রত্যেক মেয়ের একটা মাসিক রুটিন। কিন্তু প্রতি মাসে এই চার-পাঁচটা দিন বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন অনেক মেয়েরায়। পিরিয়ডের সময় যন্ত্রণা, মুড স্যুইং, খিদে না পাওয়া খুবই সাধারণ সমস্যা। শারীরিক দুর্বলতাও দেখা দেয় এই সময়। পিরিয়ড শুরুর কয়েকদিন আগে থেকে ক্লান্তিভাব বেশি আসে। গবেষণায় দেখা গেছে, অন্তত ৯০ শতাংশ মহিলাই পিরিয়ডের আগে এবং পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত দুর্বল ও ক্লান্তি অনুভব করেন। তাই এই সময় শরীরের সবচেয়ে বেশি যত্নের প্রয়োজন। কিন্তু মাসিকের সময় কেন শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে? এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়ই বা কী? আসুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।

আরও পড়ুনঃ মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ নিয়ে উচ্ছোসিত মোদী, কী বললেন নমো? দেখুন

পিরিয়ডের সময় দুর্বলতার কারণ

হরমোন

পিরিয়ডের আগে এবং সেই সময় শারীরিক দুর্বলতা ও ক্লান্তির অন্যতম কারণ হল হরমোনের ওঠানামা করা। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে যাওয়ার কারণে দুর্বলতা অনুভব হয়। পিরিয়ডের শেষে যতক্ষণ না ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, ততক্ষণ পর্যন্ত ক্লান্তিবোধ থেকেই যায়।

আয়রনের মাত্রা কমে যাওয়া

মাসিকের এই সময়টাতে আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়। যে কারণে ক্লান্তি অনুভব হতে পারে। তাই এই সময় আয়রন সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খাওয়া উচিত।

অস্বাস্থ্যকর ডায়েট

অনেকেরই পিরিয়ডের সময় মিষ্টিজাতীয় খাবার, ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুডের প্রতি লোভ বেড়ে যায়। কিন্তু এতে শরীরের ক্ষতিই হয়। কম পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার ফলে পিরিয়ডের সময় শারীরিক দুর্বলতা বাড়ে। আয়রন, প্রোটিন, ওমেগা-৩, ম্যাগনেশিয়াম এবং ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াই সবচেয়ে ভাল।

 

পিরিয়ডের সময় দুর্বলতা কাটানোর উপায়

পুষ্টিকর খাবার খান

পিরিয়ডের সময় শারীরিক ক্লান্তি, দুর্বলতা কাটাতে ডায়েটের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। টাটকা ফলমূল, শাকসবজি এই দিনগুলোয় অবশ্যই খেতে হবে। বিশেষ করে কালে এবং পালং শাকের মতো শাক বেশি করে খান। এই সময় শরীরের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন আয়রন। আয়রন এবং বি ভিটামিন সমৃদ্ধ সবুজ শাকসবজি পিরিয়ডের ক্লান্তি দূর করতে খুবই উপকারী। এ ছাড়া বাদাম, চকোলেট, গোটা শস্য, দই, কলার মতো খাবারও খেতে পারেন এই সময়।

প্রচুর জল খান

পর্যাপ্ত পরিমাণে জল না পান করলে শরীরে ক্লান্তি দেখা দেয়। শরীরে শক্তি উত্‍পাদনের ক্ষেত্রেও জলের প্রয়োজন। তাই প্রতিদিন কমপক্ষে দুই লিটার জল পান করা খুবই জরুরি। চা, কফি, কোল্ড ড্রিঙ্কস বা অন্যান্য চিনিযুক্ত পানীয়ের চেয়ে সাধারণ জল পান আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে সবচেয়ে উপকারী। এই সময় ভুলেও অ্যালকোহল পান করবেন না। কারণ এতে ক্লান্তি আরও বাড়ে।

শরীরচর্চা

ওয়ার্কআউট বা ব্যায়ামের মাধ্যমেও শরীরে দ্রুত এনার্জি ফেরে, স্ট্রেস কমে, পাশাপাশি ঘুমও ভাল হয়। এই সময় কিছু হালকা ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। দিনের কিছুটা সময় হাঁটতেও যেতে পারেন। শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম এবং মেডিটেশন করাও উপকারী হবে।

রাতে ভাল ঘুম হওয়া প্রয়োজন

পিরিয়ডের ক্লান্তি কাটানোর অন্যতম উপায় হল পর্যাপ্ত ঘুম। প্রতি রাতে নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান। শোওয়ার এক ঘণ্টা আগে মোবাইল, ল্যাপটপ, ট্যাব, টিভির মতো সমস্ত ইলেকট্রনিক ডিভাইস বন্ধ করে দিন। সন্ধের পর চা, কফির মতো ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়ও পান করবেন না। কারণ এতে অনিদ্রার সমস্যা হতে পারে।

en.wikipedia.org