নদীয়া জেলায় আরএসএসের পাঁচ গুণ শাখা বৃদ্ধি তৃণমূলের আমলে দাবি সঙ্ঘের। নদীয়ায় শুরু হয়েছে আরএসএসের ‘প্রাথমিক বর্গ’ প্রশিক্ষণ শিবিরের। জেলায় দীর্ঘ দিন ধরেই আরএসএস সক্রিয়। নদীয়া জেলায় তাদের সংগঠন ধীরে ধীরে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে দাবি করছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ। তাদের হিসাব অনুয়ায়ী, বাম আমলের তুলনায় বর্তমানে এই বৃদ্ধির হার অনেকটাই বেশি।
শুধু শাখা সংগঠনের সংখ্যাবৃদ্ধিই নয়, গত শুক্রবার থেকে নদীয়ায় শুরু হওয়া ‘প্রাথমিক বর্গ’ প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়তনও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি তাদের। তবে বেশ কয়েক বছর ধরে তাদের শাখা সংগঠনগুলি জেলার প্রায় প্রতিটি প্রান্তে সক্রিয় ভাবে কাজ করছে। ফলে ভোটের ময়দানে বিজেপির হয়ে তাদের সক্রিয়তাও অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে বলে সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রতি বছরই নদিয়া জেলায় আরএসএস-এর ‘প্রাথমিক বর্গ’ প্রশিক্ষণ হয়। আরএসএস সূত্রের খবর মাঝে বছর দুই তা হয়নি কোরনা কালে।
আরও পড়ুন- পেনশন না পাওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেন পেনশন প্রাপকরা
এবার নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার জন্য তাহেরপুর হাইস্কুল এই শিবিরের আয়োজন হয়েছে। সেখানে মতাদর্শগত পাঠ দেওয়ার পাশাপাশি লাঠিখেলা, শরীরচর্চা, যোগাসন এমনকি ক্যারাটেও শেখানো হয়। এই প্রশিক্ষণ শিবির থেকেই প্রথম বর্ষের প্রশিক্ষণ শিবিরের জন্য স্বয়ংসেবকদের পাঠ দেওয়া হয়। ২০১১ সালের আগে নদিয়া জেলায় যেখানে মাত্র আট-নয়টি শাখা ছিল, সেটা এই ক’বছরে বাড়তে বাড়তে ৭৩টিতে এসে দাঁড়িয়েছে। তার মধ্যে শুধু দক্ষিণেই আছে প্রায় ৪০টি।আরএসএসের দাবি, এ বার তাহেরপুরের স্কুলে প্রায় ১৫০ জনের মতো প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। শুধু এই বছরেই ‘জয়েন আরএসএস’ ওয়েবসাইটে পাঁচশো জনেরও বেশি প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন বলে দাবি তাদের পক্ষ থেকে।
প্রত্যাশিত ভাবেই, বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে-র দাবি, “মমতা সরকারের মদতে এই রাজ্যেও আরএসএস-এর শিকড় ক্রমশ গভীরে বিস্তারলাভ করছে। যা শুধু এ রাজ্যের জন্য নয়, গোটা দেশের জন্যই বিপজ্জনক।” তৃণমূলের নদিয়া জেলার মুখপাত্র বাণীকুমার রায় পাল্টা বলেন, “সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই গোটা দেশ দেখছে। সিপিএমই বরং তাদের লোকজন ও ভোটারদের বিজেপিতে পাঠিয়ে তাদের পায়ের তলার মাটি শক্ত করার চেষ্টা করে গিয়েছে। বিগত নির্বাচনগুলিতেই সেটা দেখা গিয়েছে। আর সেই কারণেই আরএসএস এই বাড়বাড়ন্ত।”
তবে সঙ্ঘের সূত্রে মনে করা হচ্ছে যে আগে লোকে বিজেপি করলেও আরএসএস-এর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হত না। এখন বিজেপিতে পদ পেতে বা ক্ষমতা ভোগ করতে গেলে আরএসএস করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে অনেকেই।
সংগঠনের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার কার্যবাহ রঞ্জিত সরকার অবশ্য বলছেন, “যে যা-ই বলুক, ধারাবাহিক ভাবেই আমাদের সংগঠনের শক্তিবৃদ্ধি হচ্ছে।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন তাদের সাহায্যেই বিজেপি ২০২১ এ বিধানসভা ভোটে ভালো ফল করে নদিয়া দক্ষিণ জেলায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে এই সাংগঠনিক জেলায় নটি বিধানসভা আসনের মধ্যে শান্তিপুর বাদে সবকটি জেতে বিজেপি।