গোর্খাল্যান্ডের দাবি ধ্বংসাত্বক, গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে নস্যাৎ করে রাজ্য সরকারের সহায়তায় পাহাড়ের উন্নয়ন কাজে ঝাপাতে চায় জিটিএ

গোর্খাল্যান্ডের দাবি ধ্বংসাত্বক। গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে নস্যাৎ করে রাজ্য সরকারের সহায়তায় পাহাড়ের উন্নয়ন কাজে ঝাপাতে চায় জিটিএ। রাজ্য সরকারের সহায়তায় পাহাড়বাসীর সার্বিক উন্নয়নই পাহাড়ের আসলে স্থায়ী সমাধান মন্তব্য জিটিএ সিইও অনিত থাপার। তার ষ্পষ্ট বক্তব্য গোর্খাল্যান্ড ট্যেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের চুক্তিপত্র থেকে সরে আসার গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দাবি আদতে সম্পূর্ণরূপে অপরিনত রাজনৈতিক চমক। নির্বাচনের মুখে পাহাড়ভূমি গোর্খাল্যান্ড থেকে স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান সবটাই শুধুই হল্লা(আওয়াজ)। শনিবার শিলিগুড়ির অদূরে দাগাপুর পিনটেল ভিলেজে সাংবাদিক বৈঠক করেন জিটিএ সিইও অনিত থাপা।

 

লোকসভা ভোট এগিয়ে আসতে পাহাড়ে অশান্তির ছক কষছে বিজেপি। জনভিত্তিহীন ত্রিমূর্তি বিমল বিনয় এবং অজয় গেরুয়া শিবিরের দিল্লির দরবারের নির্দেশে দার্জিলিংয়ে ফের গোর্খাল্যান্ডের নামে অশান্তির আগুন জ্বালানোর পরিকল্পনা রূপায়নে ময়দানে নেমেছে। একইসঙ্গে রাজ্য সরকারের মাধ্যমে পাহাড়ের উন্নয়নের জিটিএ -এর কাজে বাধা আরোপ করতে কোনঠাসা বিজেপি বিমল-বিনয়-অজয়কে দিয়ে নিয়মিত ভাবে এই অশান্তির বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

 

পাহাড়বাসীর মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে সম্প্রতি অযৌক্তিক রাজনৈতিক বিতর্ক উত্থানের লক্ষ্যে জিটিএ চুক্তির স্বাক্ষরিত সমর্থক পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। পাহাড়ি পাথুরে ভূমিতে জনবিচ্ছিন্ন গোর্খা জন মুক্তি মোর্চা অস্তিত্বহীনতার মুখে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে। আর এদিন সেই বিভ্রান্তির হাওয়াকে উড়িয়ে দিয়ে স্পষ্ট বক্তব্য পেশ করেন জিটিএ সিইও অনিত থাপা।

 

অনিত জানান- জিটিএ চুক্তি থেকে স্বাক্ষরিত সমর্থন তুলে নেওয়ার গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দাবি সম্পূর্ণ অপরিণত রাজনৈতিক চমক। জিটিএ সম্পূর্ণরূপে সংবিধানগত আইন প্রণয়নের মাধ্যমে গঠিত। ২০১৮সালে ফলত ত্রিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে জিটিএ এক্ট রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষরের মাধ্যমে সংবিধানগতভাবে আইনসিদ্ধ হয়। ফলস্বরূপ কোনো পক্ষ চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ালেও তার প্রভাব পড়বে না জিটিএ এর বোর্ডের ওপর।

 

এদিন অনিতের ষ্পষ্ট মন্তব্য- রাজ্য সরকারের হাত ধরেই জিটিএকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। সরকারের সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন প্রস্তাব এবং আলোচনার মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে তা হবে। তিনি বলেন রাজ্য সরকারের মাধ্যমে জিটিএকে শক্তিশালী করে পাহাড়বাসীকে কর্মসংস্থান ও নাগরিক পরিষেবা প্রদান করাই পাহাড়ের আসল স্থায়ী সমাধান। অনিতের বক্তব্য আমার কাছে স্থায়ী সমাধান হলো পাহাড়বাসীর প্রতিটি ঘরে জল পৌঁছে দেওয়া, পাহাড়বাসীর কর্মসংস্থান, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ভালো স্বাস্থ্যপরিসেবা পৌঁছে দেওয়া,পাহাড়ের রাস্তাঘাট, শিক্ষার উন্নয়ন ও প্রসার ঘটানো।

 

তার মন্তব্যে রাজ্য সরকারের সহায়তায় পাহাড়বাসীর স্বার্থে পাহাড়ের উন্নয়নের লক্ষ্য জিটিএর। তিনি জানান সম্প্রতি কলকাতা গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও পাহাড়ের উন্নয়নমূলক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন তিনি। তিনি বলেন আমাদের উন্নয়ন মূলক কাজ দেখাতে হবে তাহলেই রাজ্য সরকার ধীরে ধীরে জিটিএকে আরো শক্তিশালী ও সমস্ত দপ্তরকে পূর্ণাঙ্গ রূপে সক্রিয় করে তুলতে পদক্ষেপ নেবে। এদিকে গোর্খাল্যান্ড ইস্যুর উস্কানি আগুনে পাহাড়ে আর যেন কোনোভাবেই ধ্বংসাত্মক ইতিহাসের পুনুরাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়েও সাফ হুঁশিয়ারি তার।

 

জিটিএ সিইও তথা পাহাড়ের এক চেটিয়া ক্ষমতায় থাকা ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার প্রতিষ্ঠাতা অনিত থাপা বলেন বিজেপি এখন গোর্খাল্যান্ড নিয়ে সম্মুখে কিছু বলছে না। নতুন এক নামকরণ তারা করেছেন স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান আসলে তা তার ব্যাখ্যাও তাদের কাছে নেই। কতবার পাহাড় থেকে বিজেপি সাংসদ পাঠানো হয়েছে দিল্লিতে। কিন্তু কোন সদার্থক কাজ হয়নি। শুধুমাত্র গোর্খাল্যান্ডের আবেগের নামে রাজনৈতিক উস্কানিতে পাহাড় ধ্বংস হয়েছে। বহু মানুষের কফিন নেমেছে,পাহাড়বাসি পরিজন হারা হয়েছেন।

 

বিমল বিনয়কে এক হাত করে তিনি বলেন আগের নেতৃত্বরা পাহাড়কে ধ্বংসের আগুনে জ্বালিয়েছে। তার দাবি গ্লিনারীজ কর্ণধার হামরোর অজয় নিজের বোর্ড ধরে রাখতে পারেনি। বিমল গুরুং ও বিনয় তামাঙয়ের পাহাড়ে কোনো জনবল নেই। তাদের মুখে গোর্খাল্যান্ড দাবি পুরোটাই রাজনৈতিক কৌশল যার দ্বারা দার্জিলিংয়ে শুধু আগুন জ্বলবে। এ মুহূর্রে পাহাড়বাসীর উন্নয়নকল্পে রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মিলে তার সহায়তায় কাজ করতে হবে।

আরও পড়ুন – বিনা নোটিশে জাতীয় সড়কের টোল প্লাজা খোলায় ধুন্ধুমার রায়গঞ্জে

পাশাপাশি অতি দ্রুত কোভিড কালে জিটিএ চেয়ারম্যান রিলিফ ফান্ড এর ২ কোটি টাকার অর্থ দিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে পাহাড়ি বাসির সুবিধার্থে শ্রমিক ভবন তৈরীর হতে চলেছে। জিটিএ সিইও অনিত জানান- ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে জমি চিহ্নিত হয়েছে সেখানে শ্রমিক ভবন তৈরি করা হবে।