হাওড়া-পুরী ‘বন্দে ভারত’ উদ্বোধন করে মোদী বললেন ‘সময় বাঁচবে, বাড়বে ব্যবসা’,

হাওড়া-পুরী ‘বন্দে ভারত’ উদ্বোধন করে মোদী বললেন ‘সময় বাঁচবে, বাড়বে ব্যবসা’, ‘বন্দে ভারত’ এক্সপ্রেস (Vande Bharat Express) যখন একস্থান থেকে অন্যস্থানে যায় তার মধ্যে ভারতের গতি ও প্রগতি বোঝা যায়। পুরী (Puri) থেকে হাওড়া (Howrah) বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চললে বাংলা (Bengal) ও ওড়িশার (Odisha) মধ্যে ভারতের গতি-প্রগতি বোঝা যাবে। বৃহস্পতিবার পুরী-হাওড়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধনের পর জগন্নাথদেবকে স্মরণ করে এমনই মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। তিনি বলেন, “ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের লোকেদের বন্দে ভারত ট্রেন উপহার দেওয়া হল। এই ট্রেন চালু হওয়ায় কলকাতা থেকে পুরীতে জগন্নাথ দর্শন করতে আসতে অথবা পুরী থেকে কোনও কাজে কলকাতায় যেতে হলে সাড়ে ৬ ঘণ্টায় পৌঁছে যাওয়া যাবে। এর ফলে যেমন সময় বাঁচবে, তেমনই ব্যবসা বাড়বে।” এর জন্য বাংলা ও ওড়িশার লোকেদের শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কেবল বন্দে ভারত এক্সপ্রেস নয়, এদিন ওড়িশায় একাধিক রেল প্রকল্পের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

 

 

 

 

 

 

ওড়িশা খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ একটি রাজ্য। এ প্রসঙ্গে পূর্বতন সরকারকে তোপ দেগে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এতদিন ভুল নীতির জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন থেকে ওড়িশা বঞ্চিত ছিল।” তবে তাঁর সরকারের ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ নীতিতে দেশের পিছিয়ে পড়া রাজ্যগুলিও বিশেষ লাভবান হচ্ছে বলে দাবি নমো-র। তিনি বলেন, “২০১৪-র আগে ১০ বছরে প্রায় ২০ কিমি রেললাইন পাতা হত। ২০২২-২৩ বর্ষে, এক বছরে প্রায় ১২০ কিমি রেললাইন পাতা হচ্ছে। হরিদাসপুর-পারাদ্বীপ, টিটলাগড়-রায়পুর নতুন লাইন পাতা হচ্ছে। সমস্ত লাইনে বৈদ্যুতিকরণ করা হচ্ছে। আজ ওড়িশা দেশের সেই রাজ্য, যেখানে ১০০ শতাংশ রেললাইনে বৈদ্যুতিককরণ হয়েছে। খনিজ ভাণ্ডারে সমৃদ্ধ ওড়িশায় রেলের বৈদ্যুতিকরণের ফলে রাজ্যের আরও উন্নয়ন হবে। এবার মালগাড়ি বিদ্যুতে চলবে। ডিজেলের দূষণ থেকে মুক্তি পাবে রাজ্য।”

 

 

 

 

 

কেবল ওড়িশা নয়, বাংলাতেও ১০০ শতাংশ রেললাইনে বৈদ্যুতিকরণের কাজ হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও জানান, ওড়িশা ও বাংলার জন্য আগের থেকে বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্যও বিশেষ পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এছাড়া তাঁর সরকারের কাজের পরিসংখ্যান দিয়ে নরেন্দ্র মোদী জানান, গোটা দেশে আড়াই কোটির বেশি ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ওড়িশায় ২৫ লক্ষ, বাংলায় সওয়া ৭ লক্ষ ঘরে রয়েছে। আবার দুই রাজ্যে পরিকাঠামোর উন্নয়নে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে জানিয়ে নমো বলেন, “রেল, হাইওয়ের উন্নয়ন করা হচ্ছে। এর ফলে শুধু যাতায়াতে সুবিধা নয়, কৃষি, শিল্পক্ষেত্রে নতুন বাজারের সঙ্গে সংযোগ হবে, পর্যটকেরা দ্রুত পর্যটন কেন্দ্রে পৌঁছে যেতে পারবেন। ছাত্ররাও পছন্দের কলেজে যেতে পারবেন। পরিকাঠামোর উন্নয়ন হলে লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান হয়।” এভাবে ভারত দ্রুত আধুনিকতায় পৌঁছছে বলে দাবি নরেন্দ্র মোদীর। তাঁর দাবি, একটা সময়ে কোনও নতুন প্রযুক্তি এলে দিল্লি বা বড় শহরেই সীমাবদ্ধ ছিল। আজ সেই ভাবনা পিছনে ফেলে গোটা দেশে ছড়িয়েছে। আজ দেশের কোণায় পৌঁছে যাচ্ছে দেশের প্রযুক্তি। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা, আষুষ্মান ভারত, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, জল জীবন মিশন, উজ্জ্বলা যোজনা সহ বিভিন্ন প্রকল্পে গোটা দেশের বহু মানুষ উপকৃত হয়েছে। আগামী দিনে ওড়িশা, বাংলা সহ পুরো দেশের গতি আরও বাড়বে।

 

 

 

 

 

আরও পড়ুন – মমতার সঙ্গে বৈঠক শেষে ‘আশ্বস্ত’ কুড়মি প্রতিনিধিরা

 

 

 

 

এদিন ভার্চুয়ালি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধনের পাশাপাশি পুরী ও কটক স্টেশনের আধুনিকীকরণের শিলান্যাস, নতুন রেললাইন ও রেললাইনে বৈদ্যুতিকরণের কাজের শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “আজ ওড়িশার রেলের উন্নয়নের জন্য আরও অনেক কিছু দেওয়া হচ্ছে। পুরী ও কটক স্টেশনের আধুনিকীকরণের শিলান্যাস, রেললাইনের কাজ এবং ওড়িশায় রেললাইনে ১০০ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পের শিলান্যাস করা হল। এই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত হলে ওড়িশার সংযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে এবং ভ্রমণ সহজতর হবে। ওড়িশার বাসিন্দাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।”