জোর করে নাবালিকার অন্তর্বাস খুলে তাকে শুইয়ে দেওয়া ধর্ষণ করারই সমতুল্য,রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট

জোর করে নাবালিকার অন্তর্বাস খুলে তাকে শুইয়ে দেওয়া ধর্ষণ করারই সমতুল্য,রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট

আইসক্রিমের লোভ দেখিয়ে নাবালিকার অন্তর্বাস খুলে শুইয়েছিল, ধর্ষণ বলেই রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট, বিচারপতি জানিয়েছেন, শারীরিক পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ না পাওয়া গেলেও এই ঘটনা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারা অনুযায়ী ধর্ষণের সমতুল্য অপরাধ। ফলে এই মামালয় নিম্ন আদালতের রায়ই বহাল রেখেছেন তিনি।মেডিক্যাল পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ না থাকলেও অন্যান্য সাক্ষ্য-প্রমাণ এবং অপরাধীর উদ্দেশ্য বিচার করেই একটি মামলার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি এমন যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

 

 

মূল ঘটনাটি ২০০৭ সালের। সেই বছর মে মাসে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের এক নাবালিকাকে আইসক্রিমের লোভ দেখিয়ে একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল অভিযুক্ত রবি রায়। সেখানে সে নাবালিকাকে নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস খুলতে বলে। কিন্তু তাতে রাজি না হয়ে পালিয়ে যায় নাবালিকা। এরপর কিশোরীকে ফের ধরে এনে তার নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস খুলে দিয়ে জোর করে শুইয়ে দেয় রবি। কিন্তু নাবালিকা চিৎকার করতে শুরু করলে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। তাঁরাই অভিযুক্ত রবিকে ধরে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
সেই ঘটনায় অভিযুক্ত রবির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা রুজু হয়। ২০০৮ সালে বালুরঘাট জেলা ও দায়রা আদালত রবিকে দোষী সাব্যস্ত করে ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৩ হাজার টাকা জরিমানারও নিদেশ দেন।

 

 

 

 

তারপর কেটে গেছে ১ যুগেরও বেশি সময়। এতদিন পর জেলা ও দায়রা আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে পাল্টা মামলা দায়ের করে রবি রায়। নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষায় ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি। তার দাবি, কোনও অসৎ উদ্দেশ্যে নয়, বরং কিশোরীকে আদর করার জন্যই এমন কাজ করেছিল সে। সেই মামলাতেই অভিযুক্তের দাবি নস্যাৎ করে দিয়ে এমন যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন কলকাতা উচ্চ আদালতের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিচারক জানিয়েছেন, অপরিচিত কোনও ব্যক্তি এমন কাজ করেছেন মানে তিনি নাবালিকাকে ধষর্ণের উদ্দেশ্যেই তা করেছিলেন, এ নিয়ে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই।

 

আরও পড়ুন – শ্রদ্ধার হাড়গোড় মিক্সারে ফেলে গুঁড়ো গুঁড়ো করেন আফতাব

 

গত ৩ জানুয়ারি মামলার রায়ে তিনি সাফ জানিয়েছেন, যৌন হেনস্থার অভিসন্ধি ছাড়া অভিযুক্তের নাবালিকাকে আইসক্রিম দেওয়ার কোনও কারণ ছিল না। প্রথমে তাকে লোভ দেখিয়ে নির্জন জায়গায় ডেকে নিয়ে যাওয়া, তারপর তাকে অন্তর্বাস খুলতে বলা, এবং রাজি না হলে জোর করে তা খুলে দেওয়ার পিছনে ধর্ষণ ছাড়া অন্য কোনও উদ্দেশ্য থাকতে পারে না। ‘নাবালিকা শিশুটিকে নিমাঙ্গের অন্তর্বাস খুলিয়ে জোর করে মাটিতে শোয়ানো যৌন নির্যাতনের উদ্দেশ্যেই করা হয়েছিল। তাকে আদর করার জন্য ইচ্ছের বিরুদ্ধে তার অন্তর্বাস খোলানো যায় না,’ জানিয়েছে আদালত।