‘স্ত্রীকে, ৩ বছরের ছেলেকে ধরে জেলে ঢোকালেও মাথা নত করব না,’ সরব অভিষেক,

‘স্ত্রীকে, ৩ বছরের ছেলেকে ধরে জেলে ঢোকালেও মাথা নত করব না,’ সরব অভিষেক, তাঁর স্ত্রীকে, ৩ বছরের ছেলে, এমনকি, তাঁকে জেলে ঢোকালেও বিজেপির সামনে মাথা নত করবেন না। সোমবার তৃণমূলের জনসংযোগ যাত্রা কর্মসূচিতে ফুরফুরা শরিফে দাঁড়িয়ে এই কথাই জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করে জানালেন, ক্ষমতা থাকলে তাঁকে গ্রেফতার করা হোক। তাঁর দাবি, নবজোয়ার যাত্রা আটকানোর জন্যই এ সব করা হচ্ছে। যদিও তিনি দমবার পাত্র নন। গলা কেটে দিলেও তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন না। আর তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র দফতরে হাজিরা দেবেন।

 

 

 

 

 

 

সোমবার সকালে বিদেশ যাওয়ার পথে বিমানবন্দরে অভিষেকে স্ত্রী এবং ২ সন্তানকে আটকেছে ইডি। ৮ জুন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে সমন পাঠিয়েছে। সেই নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। নাম না করে ২০১৯ সালে সোনা পাচার করেছেন রুজিরা বলে অভিযোগ তোলেন বিরোধী নেতা। রাতে ফুরফুরা শরিফে দাঁড়িয়ে তার জবাব দেন অভিষেক। তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে জানান, গোটা বিমান বন্দরে ৫০০টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। বিমানবন্দরে পাহারা দেয় সিআইএসএফ, যা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনে। বিরোধী দলনেতা প্রমাণ করুন যে, তাঁর স্ত্রী ২ গ্রাম সোনা পাচার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূল যেহেতু মানুষের স্বার্থে লড়ছে, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ছে, ইডি, সিবিআই লাগিয়ে যাত্রাটাকে কী ভাবে আটকানো যায়, সেই চেষ্টা চলছে।’’

 

 

 

 

 

তা বলে তিনি মেরুদণ্ড বিকিয়ে বিজেপিতে যোগ দেবেন না, সে কথাও জানিয়েছেন অভিষেক। তাঁর দাবি, নন্দীগ্রামে তিনি ২০ কিলোমিটার পদযাত্রা করার পরেই শুভেন্দু ভয় পেয়ে গিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘নন্দীগ্রামে ২০ কিলোমিটার পদযাত্রা করেছি, সমন তার পুরস্কার।’’ নাম না করেই দাবি করেছেন, শুভেন্দু এবং তাঁর পরিবার ‘পা থেকে মাথা পর্যন্ত দুর্নীতিগ্রস্ত’। এই প্রসঙ্গেই অভিষেক জানান যে, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের থেকেও বেশি ‘লাভবান’ হয়েছেন শুভেন্দু। কেন তিনি এই কথা বলেছেন, তাঁর যুক্তিও দিয়েছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘টিভিতে দেখেছি, পার্থকে দালালদের মাধ্যমে যে টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের ৯০ শতাংশ পূর্ব মেদিনীপুরের। পূর্ব মেদিনীপুরের যিনি সর্বেসর্বা ছিলেন, তাঁকে ধরুন। পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁরাও সব পূ্র্ব মেদিনীপুরের। সারদায় সব থেকে বেশি বেনিফিশিয়ারি শুভেন্দু।’’

 

 

 

 

সোমবার অভিষেক স্পষ্টই জানালেন যে, তাঁর সঙ্গে রাজনৈতিক ভাবে পেরে উঠছে না বিজেপি। সে কারণেই ইডি, সিবিআই লাগানো হচ্ছে। এখন নবজোয়ার যাত্রা বন্ধ করতেই ফের তাঁর স্ত্রীকে তলব করেছে সিবিআই। অভিষেক জানালেন, গত সেপ্টেম্বরে চোখের চিকিৎসার জন্য তাঁর সঙ্গে বিদেশ গিয়েছিলেন স্ত্রী রুজিরা। তখন বাধা দেয়নি ইডি। অভিষেকের যুক্তি, ‘‘এখন তৃণমূলে নবজোয়ার চলছে বলে কী ভাবে অভিষেককে মানসিক ভাবে হেনস্থা করা যায়, চেষ্টা চলছে।’’ তিনি এও জানিয়েছেন যে, তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রীকে বিদেশ যাত্রার অনুমতি দিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালত। গত ১৭ অক্টোবর সে কথা জানিয়েছিল। এর পরেও ৩ জুন তাঁর স্ত্রী ইডিকে মেল করে বিদেশ যাত্রার কথা জানিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘ইডি চাইলে সে দিনই সমন পাঠাতে পারত। কিন্তু করেনি। হেনস্থা করবে বলে অপেক্ষা করছিল।’’

 

 

 

 

 

 

আরও পড়ুন – পশ্চিমবঙ্গ চালাতে পারে ব্যানার্জি পরিবার,কিন্তু দেশ নয় বললেন শুভেন্দু,

 

 

তবে অভিষেক মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি অন্য ধাতুতে তৈরি। মেরুদণ্ড বিক্রি করে তিনি লড়াই করেন না। এর পরেই প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘আমি নরেন্দ্র মোদীকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সম্মান জানিয়েই বলছি যে, আমার বয়স ৩৬, আপনার ৭২। আপনি মানুষের দরবারে এসে আমার সঙ্গে লড়াই করুন।’’ অভিষেক স্পষ্টই জানালেন, তাঁর সঙ্গে লড়াইয়ে না পেরেই তাঁর স্ত্রী, সন্তানদের ‘টার্গেট’ করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘৩ বছরের ছেলে, ৯ বছরের মেয়ে, তাদেরও ছাড়ছেন না। পরিবারকে টার্গেট করলেও মাথা নত করব না, গলা কাটলেও মাথা নত করব না।’’ আগামী দিনে মোদীকে ‘উৎখাত’ করে ছাড়বেন বলে জানিয়েছেন অভিষেক। এ ক্ষেত্রে তাঁর পাশে রয়েছেন মানুষ, সে কথাও জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ।