কলকাতা – বিয়ের টোপ দিয়ে কলকাতা পুলিস পরিচয় দিয়ে এক মহিলার কাছ থেকে প্রায় ১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তোলপাড় উঠেছে সিঁথি থানা এলাকায়। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিস, তবে এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি বলে সূত্রের খবর।৩৮ বছর বয়সি অভিযোগকারিণী সিঁথি মোড় এলাকার বাসিন্দা। ২০১৮ সালে তাঁর প্রথম বিবাহ হয় এবং তাঁদের যমজ সন্তান জন্মায়। তবে বিয়ের মাত্র দু’বছরের মধ্যেই স্বামী মারা যাওয়ায় সন্তানদের মানুষ করতে পরিবারের চাপে দ্বিতীয়বার বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন ওই মহিলা। ২০২১ সালে তিনি একটি বিবাহবন্ধনীর ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খোলেন এবং ২০২২ সালে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয়। ওই যুবক নিজেকে কলকাতা পুলিসে কর্মরত বলে পরিচয় দেয় এবং পুলিসের আইডি কার্ডও দেখায়।
পরিচয়ের কিছুদিন পরই ওই যুবক মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়, এবং তাতে সম্মতি জানান মহিলা। এরপর থেকেই শুরু হয় প্রতারণা। যুবক জানায়, তাঁর পারিবারিক সম্পত্তির মিউটেশন না হলে বিয়ে করা সম্ভব নয়। কিছু আর্থিক সমস্যা থাকায় সেই কাজটি সম্পূর্ণ করতে পারছেন না তিনি। তবে তিনি মহিলার কাছে কোনও টাকা চাননি বলে দাবি করে। কিন্তু, সরল বিশ্বাসে মহিলা নিজেই সাহায্যের হাত বাড়ান।
এক আইনজীবীকে মিউটেশনের কাজের জন্য ঠিক করে ওই যুবক, যিনি নাকি কলকাতা পুরসভার আইনি কাজে যুক্ত। এই ‘আইনজীবী’র ফি বাবদ প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা এবং অন্যান্য রেজিস্ট্রেশন ও আইনি খরচ দেখিয়ে আরও ৫০ লক্ষ টাকা নেয় অভিযুক্ত। সব মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি টাকা দিয়ে ফেলেন ওই মহিলা।অবশেষে টাকা নেওয়ার পরই যুবক মোবাইল নম্বর ব্লক করে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। খোঁজখবর নিয়ে মহিলা জানতে পারেন, যুবকের কোনও সম্পত্তিই নেই এবং সমস্ত কাগজপত্র ছিল জাল। প্রতারণার শিকার হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। আদালতের নির্দেশে সিঁথি থানাকে তদন্তভার দেওয়া হয়েছে।লালবাজার সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত এখনও চলছে, এবং অভিযুক্তের পরিচয় যাচাই ও অন্যান্য যুক্ত ব্যক্তিদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে। কলকাতার মতো শহরে পুলিস পরিচয় দিয়ে এমন প্রতারণার ঘটনায় নিরাপত্তা ও বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ।
