পশ্চিম মেদিনীপুর- পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় ব্লকের পাকুড়সেনি সংলগ্ন এলাকার ভয়ঙ্কর রাস্তার চেহারা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল এক মর্মান্তিক ঘটনা। প্রসব যন্ত্রণা উঠতেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হলেও রাস্তার বেহাল দশার কারণে পৌঁছনো গেল না স্বাস্থ্যকেন্দ্রে—অবশেষে গাড়িতেই সন্তান প্রসব করালেন স্থানীয় আশাকর্মী মানসী পাত্র।বুধবার ভোর ৪টা নাগাদ প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয় স্থানীয় বাসিন্দা সোনালি সিংয়ের। স্বামী সুব্রত সিং সঙ্গে সঙ্গেই যোগাযোগ করেন আশাকর্মী মানসীর সঙ্গে। মাতৃযান বা অ্যাম্বুল্যান্স এসে পৌঁছতে দেরি হতে পারে বুঝেই মানসী আত্মীয়ের মারুতি গাড়ি ডেকে পাঠান। কিন্তু গ্রামের কাঁচা, কাদামাখা রাস্তায় গাড়ির গতি থেমে যায়। গাড়ি চলাচলের অবস্থা না থাকায়, গাড়িতেই সন্তানের জন্ম দেওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেন মানসী।
প্রশিক্ষণ না থাকলেও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে মানসী পাত্র গাড়ির মধ্যেই সফলভাবে প্রসব করান। জন্ম নেয় একটি ফুটফুটে পুত্রসন্তান। এরপর মা ও নবজাতককে বেলদা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে উভয়েই সুস্থ রয়েছেন বলে জানান মানসী।ঘটনার পর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী বলেন, “আশাকর্মীরা আমাদের গর্ব। এমন দায়িত্ববোধ ও তৎপরতা সত্যিই প্রশংসনীয়।”স্থানীয়রা রাস্তার দুর্দশা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সরকারি নানা উদ্যোগে জেলার বহু রাস্তা পাকা হলেও এখনও বহু রাস্তা মেরামতির অপেক্ষায়। এই ঘটনা দেখিয়ে দিল, অবকাঠামোর অভাব কেবল অসুবিধাই নয়, প্রাণনাশের কারণও হতে পারে। সন্তানের মুখ দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন সোনালি ও সুব্রত, তবে এই পথে আরও কারও যাতে এমন দুর্ভোগ না হয়, সেটাই এখন তাঁদের প্রার্থনা।
