মাছ মাংসের চড়া দাম, তাই চাহিদা বেড়েছে ঝিনুকের

মাছ মাংসের চড়া দাম, তাই চাহিদা বেড়েছে ঝিনুকের. নিত্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিসপত্রের সাথে আকাশ ছোঁয়া দাম বেড়েছে মাছ-মাংসের । তাই চাহিদা বেড়েছে শামুক ঝিনুক ও গেরী বা গুজুরির । স্থানীয় ভাষায় ঝিনাই গুজরি বলেই পরিচিত ।এই ঝিনুক গুজুরি উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সমাজের মানুষের একটি জনপ্রিয় খাদ্য । মাছ মাংসের সাথে তাদের খাদ্য তালিকায় প্রিয় খাবার ঝিনুক গেরি বা গুজুরি ।

 

এই ঝিনুক গুজুরি পাওয়া যায় নদী বা বিলে । প্রধানত আদিবাসী সমাজের কিছু রমণী নদী ও খাল থেকে ঝিনুক ও গুজুরি সংগ্রহ করে হাটে হাটে বিক্রি করে কিছু রোজগার করে । দুই, তিন দশক আগে এগুলি বাটি হিসেবে , বিক্রি করতো চার আনা, আট আনা দরে । এরপর এক দশক আগে পাঁচ থেকে দশ টাকা কিলো দরে বিক্রি হতো । বর্তমানে মাছ-মাংসের চড়া বাজার হওয়ার কারণে পাল্লা দিয়ে দাম বেড়েছে ঝিনুক গুজুরির জানা গিয়েছে,বর্তমানে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কিলো ধরে বিক্রি হচ্ছে গেরি বা গুজুরি ।

 

আর ঝিনুকের শাস বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা পোয়া অর্থাৎ ২০০ টাকা কিলো দরে । চাহিদাও আছে ভালো । জানালেন প্রতিবেশী বিহার রাজ্যের কিষণ গঞ্জ জেলার পুঠিয়া থানার টিপি ঝাড়ি এলাকার আদিবাসী রমণী সীতা মুর্মু ও চিল্কি মুর্মুরা । তারা জানান গৃহস্থের বাড়িতে দিন মজুরি কাজ করার ফাঁকে মহিরালা দল বেঁধে নদী ও বিলে গিয়ে ঝিনুক ও গুজুরি সংগ্রহ করে বাড়িতে আনেন । এরপর তারা হাটে হাটে গিয়ে বিক্রি করে বাড়তি আয় করেন। গেরি বা গুজুরি গোটা বিক্রি করলেও , ঝিনুক গোটা বিক্রি হয় না । ঝিনুকগুলি জলে ভিজিয়ে রেখে বিক্রি করার আগের দিন সেদ্ধ করে ওই ঝিনুক থেকে শাস বের করে আলাদাভাবে হাটে আনেন বিক্রি করার জন্য ।

 

বাড়তি পরিশ্রমের কারণে ওই ঝিনুকের শাঁস বিক্রি করেন ৫০ টাকা পোয়া বা ২০০ টাকা কিলো দরে । তবে ঝিনুকের শাস খুব বেশি যোগাড় করতে পারে না বলে জানান বিক্রেতারা । পঞ্চাশোর্ধ চিল্কি মুরমু জানান এই ঝিনুক এবং গুজুরি একটি সুস্বাদু খাবার । এছাড়াও এর পুষ্টিগুণ ও আছে । তার মতে এই গুজুরী ঝিনুকের খাদ্যগুন চোখের পাওয়ার এর জন্য ভীষণ উপকারী । তাই এই পুষ্টিকর খাবার উত্তরবঙ্গের গ্রামবাংলায় বিশেষ করে রাজবংশী সম্প্রদায়ের একটি জনপ্রিয় খাবার ।

 

শুধু দাম কমের জন্য যে তা নয়, পুষ্টিগুণের কারণে এবং পুরনো জনপ্রিয় খাবার কে আজও ভালোবেসে মাঝেমধ্যেই হাট বাজার থেকে কিনে থাকেন উত্তরবঙ্গের গ্রামের মানুষ । উল্লেখ্য উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর সোনাপুর চোপড়া ও কাঁচককালি হাটে আদিবাসী রমণীদের দেখা যায় এই ঝিনুক শাস ও গুজুরি বিক্রি করতে ।