নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা , ২৪ শে মে : দল বিরোধী কাজ ও দলকে সর্বসমক্ষে হেয় করার জন্য মুকুল রায় পুত্র শুভ্রাংশু রায় কে ৬ বছরের জন্য দল থেকে সাসপেন্ড করা হলো জানালেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের ছেলে তথা বীজপুর বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়কে শুক্রবার ছ’বছরের জন্য সাসপেন্ড করল তৃণমূল কংগ্রেস।
গতকাল লোকসভার ফল ঘোষণার পর এ দিন দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে বোমা ফাটান শুভ্রাংশু। তিনি বলেন, ‘আমি বাবার জন্য গর্বিত।” এও বলেন, “আমার বাবা একা তৃণমূল দলটাকে তছনছ করে দিয়েছেন।”
তাৎপর্যপূর্ণ হল, ভোটের আগেও কিন্তু দল সম্পর্কে তির্যক মন্তব্য করতে ছাড়েননি শুভ্রাংশু। তৃণমূলে থেকে যাওয়ার কথা বলেও ভোটের মধ্যে শুভ্রাংশু বলেছিলেন, দলের নেতা কর্মীরা তাঁকে যে ভাবে অপমান করছেন, গদ্দারের ছেলে বলছেন, তাতে তিনি আহত। শুভ্রাংশু-র সে কথা শুনে আবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তথা বালু স্বান্তনা বাক্য শুনিয়েছিলেন। এও বলেছিলেন, শুভ্রাংশু আমাদের ঘরের ছেলে। ওঁর সম্পর্কে কেউ যদি খারাপ কথা বলে তা হলে আমি নিজে ব্যবস্থা নেব।
কিন্তু ব্যারাকপুরে ভোট মিটে যেতেই ভোল পাল্টে ফেলে তৃণমূল। একে তো তৃণমূল নেতৃত্ব আঁচ করতে পারেন শুভ্রাংশুর বিধানসভা কেন্দ্র বীজপুরে তৃণমূল লিড পাবে না। তা ছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এও ঠাওর করতে পারেন, বাবার মতোই শুভ্রাংশু বিজেপি-র দিকে পা বাড়িয়ে রয়েছেন। এমনকী একদিন সাংবাদিক বৈঠকে মমতা এও বলে ফেলেন, গদ্দারের ছেলের জন্য বীজপুর থানার আইসি বদল করেছে নির্বাচন কমিশন।
পোড় খাওয়া নেতা মুকুল রায়। তিনিও হয়তো আন্দাজ করেছিলেন ভোট মিটতেই শুভ্রাংশুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে তৃণমূল। তাই এ দিন বাবার পরামর্শেই বীজপুরে সাংবাদিক বৈঠক করেন শুভ্রাংশু। সেখানে তিনি বলেন, “আমি ভুলে গেছিলাম বীজপুরটা আমার একার নয়। আমি যেমন এখানকার ভূমিপুত্র, আমার বাবা মুকুল রায়ও এখানকার ভূমিপুত্র। বাবার কাছে হেরে গেছি। মানুষ বেছে নিয়েছে বাবাকে।” এখানেই না থেমে সরাসরি যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে শুভ্রাংশু বলেন, কেউ কেউ বলেছিলেন একজন মুকুল রায় চলে গেলে ক্ষতি নেই লক্ষ লক্ষ মুকুল রায় তৈরি হবে তৃণমূলে।
মুকুল পুত্রের ওই সাংবাদিক বৈঠকের খবর যায় কালিঘাটেও। তার পর পরই তৃণমূলের তরফে জানানো হয়, বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করবেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থবাবু এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “আমাদের ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। দলে থেকে দল-বিরোধী কাজ, মন্তব্য বরদাস্ত করা হবে না।” এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে পার্থবাবু এও বলেন, “শুভ্রাংশু এর আগেও নানা রকম দলবিরোধী মন্তব্য ও পোস্ট করেছিলেন। ওঁর কথা শুনে মনে হচ্ছে, উনি দলে থেকেই তৃণমূলকে হেয় করার চেষ্টা করছেন। সেই কারণে ওঁকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হল।”