রাশিয়ার গ্যাস বন্ধে দুশ্চিন্তায় ইউরোপ। ইউরোপে গ্যাস সরবরাহে রাশিয়ার পাইপলাইন নর্ডস্ট্রিম-১ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা করেছে রাশিয়া। আসন্ন শীতকে সামনে রেখে রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল ইউরোপীয় দেশগুলো গভীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা।
মেরামতের জন্য বুধবার (৩১ আগস্ট) থেকে ইউরোপে গ্যাস রফতানিতে ব্যবহৃত প্রধান পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম-১ বন্ধ করে দেয় মস্কো। পাইপলাইনটি চালু হওয়ার কথা ছিল শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) থেকে। কিন্তু পরিকল্পনা অনুযায়ী সেটি এখনই চালু করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন নিয়ন্ত্রিত এনার্জি জায়ান্ট গ্যাজপ্রম। ফলে, ইতোমধ্যে জ্বালানি সংকটে নাকাল ইউরোপ এবার অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
আরও পড়ুন – বেহাল রাস্তা সারাইয়ের দাবিতে এশিয়ান হাইওয়ে অবরোধ স্থানীয়দের
গত শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) গ্যাজপ্রমের পক্ষ থেকে বলা হয়, মেরামতের কাজ শেষ না হওয়ায় নর্ডস্ট্রিম-১ পুনরায় চালু করা যাচ্ছে না। একটি কম্প্রেসার স্টেশনের তেলের লাইনে ছিদ্র পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এর একটি ছবিও প্রকাশ করেছে গ্যাজপ্রম। তবে এটি মেরামত করতে কত দিন লাগবে বা কবে নাগাদ নর্ড স্ট্রিম-১ চালু হবে, সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। রাশিয়া বলেছে, নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপ লাইনের টারবাইনে সমস্যা দেখা দেয়ায় ওই পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস পাঠানো যাচ্ছে না।
পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার কারণে ওই টারবাইন কানাডা থেকে আনা যাচ্ছে না বলেও দাবি করেছে মস্কো। এদিকে রাশিয়া এই পাইপলাইনে মেরামত কাজ করতে হবে বলে যে দাবি করেছে ইইউ তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে গ্যাসকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে মস্কো। ইউরোপ যাতে এ যুদ্ধে ইউক্রেনকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া বন্ধ করে দেয় সেজন্য রাশিয়া একটি অজুহাত দাঁড় করিয়ে ইউরোপে গ্যাস রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ’র অর্থনীতি বিষয়ক কমিটির সদস্য পাওলো জানতিলানি বলেছেন, রাশিয়া যদি বাল্টিক সাগরে তার মূল পাইপলাইন দিয়ে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ আবার শুরু না করে তাহলে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে ইইউ। তিনি ইউরোপে গ্যাস রপ্তানি চুক্তির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে দাবি করেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাকে ইউরোপ ভয় পায় না। তিনি পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললেও ইউরোপ ঠিক কী ব্যবস্থা নেবে তা জানাতে পারেননি। গত তিন দিনেরও বেশি সময় ধরে পাইপলাইনটি বন্ধ রয়েছে। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে রাশিয়ার গ্যাস সরাসরি জার্মানিতে প্রবেশ করে এবং এরপর ইউরোপের আরো কয়েকটি দেশে সরবরাহ করা হয়।