উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার এক আইনজীবী সহ চারজন। ধৃত চারজনকে বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি আদালতে পাঠানো হয়। তদন্তের স্বার্থে ধৃত চারজনের মধ্যে দুইজনকে ৫ দিনের পুলিশি হেপাজতের নেওয়ার আবেদন করেছে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের মাটিগাড়া থানার অন্তভুক্ত ম্যাডিকেল ফাঁড়ির পুলিশ। এই চক্রের পেছনে যে বা যারা জড়িত তাদের খোঁজে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছেন, ধৃতরা হল শম্ভু দত্ত, শুভঙ্কর দত্ত, সঞ্জয় কুমার সরকার ও বাবলু রায়। বাবলু রায় শিলিগুড়ির বাগডোগরার বাসিন্দা ও বাকিরা উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘির বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে গ্রুপ ডির নিয়োগ পত্র নিয়ে হাসপাতাল সুপার ডঃ সঞ্জয় মল্লিকের কাছে যান শম্ভু দত্ত ও শুভঙ্কর দত্ত। সুপার সেই নিয়োগ পত্রটি দেখে বুঝতে পারে যে নিয়োগপত্রটি ভুয়া। এরপর সুপার মেডিক্যাল ফাঁড়িতে ঘটনার অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে মেডিক্যাল ফাঁড়ির ওসি বিশ্বজিৎ ঘোষের নেতৃত্বে শুরু হয় অভিযান। এরপর মেডিক্যাল কলেজ থেকে প্রথমে শম্ভু এবং শুভঙ্কর কে গ্রেফতার করা হয়।
এরপর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে মেডিক্যাল কলেজের বাইরে থেকে সঞ্জয় কুমার সরকারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা গিয়েছে এই প্রতারণার চক্রের মূল পান্ডা আইনজীবী সঞ্জয় কুমার সরকার। সঞ্জয় কুমার সরকারকে হেফাজতে নিয়ে আরো দুজনের নাম উঠে আসে বাগডোগরা বাসিন্দা বাবলু ও তার আরও এক সঙ্গী। তবে বাবলু রায় কে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হলেও তার সঙ্গীর এখনও গ্রেফতার করতে পাড়েননি পুলিশ। ওসি বিশ্বজিৎ ঘোষের নেতৃত্বে যে না যারা জড়িত রয়েছে তাদের খোঁজে চলছে তদন্ত।
জানা গিয়েছে, শম্ভু দত্তের ছেলে শুভঙ্কর দত্তের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে গ্রুপ ডির চাকরির দেওয়ার জন্য সঞ্জয় কুমার সরকারের সঙ্গে সাড়ে চার লক্ষ টাকার চুক্তি হয়। চুক্তি মত শম্ভু ও শুভঙ্কর সঞ্জয়কে দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা দেয়। এবং চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর বাকি টাকা সঞ্জয়ের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল শম্ভু এবং শুভঙ্করের।
আরও পড়ুন – কোহলি কি বিশ্বকাপে বোলারের ভূমিকায়
তবে এই দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার মধ্যে এক লক্ষ পোচিশ হাজার টাকা সঞ্জয় বাবলু রায় ও তার সঙ্গীকে দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মেডিক্যালে নিয়োগ পত্র নিয়ে এসে তারা বুঝতে পারে যে নিয়োগ পত্রটি ভুয়া। সঞ্জয়ের কাছ থেকেই এক লক্ষ পোচিশ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে মেডিক্যাল ফাঁড়ির পুলিশ। বাকি যে বা যারা জড়িত রয়েছে এই প্রতারণা চক্রের পিছনে তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
অভিযোগ দায়ের হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মেডিক্যাল ফাঁড়ির পুলিশ অগ্রনী ভূমিকা গ্রহণ করে প্রতারণা চক্রের সঙ্গে জড়িত মূল পান্ডা সহ চারজনকে গ্রেফতার করে। সম্পূর্ণ ঘটনা তদন্তে পুলিশ।