নিয়োগ মামলায় ফের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে গিয়েছেন তিনি। অভিষেককে তদন্তে সহযোগিতা করতে বলেছিল হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু বিচারপতি অমৃতা সিংহের নির্দেশের উপর হস্তক্ষেপ করেনি ওই বেঞ্চ। উচ্চ আদালতের এই অস্বস্তি থেকে রেহাই পেতে আবার শীর্ষ আদালতে তৃণমূল নেতা। তবে তাঁর মামলাটি দায়ের হলেও শুনানির দিন এখনও ধার্য হয়নি।
আরও পড়ুন: মহুয়ার পাশে এবার অধীর
বিচারপতি সিংহের একাধিক নির্দেশের ফলে তাঁর অধিকার এবং স্বার্থে প্রভাব পড়ছে এই আবেদন জানিয়ে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যান অভিষেক। তৃণমূল নেতার বক্তব্য, সিঙ্গল বেঞ্চ তদন্তের প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়ন্ত্রণ করছে। অভিষেক, তাঁর পরিবার এবং লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস কোম্পানির বিরুদ্ধে ইডিকে নির্দিষ্ট করে নির্দেশ দিচ্ছেন বিচারপতি সিংহ। কম সময়ের ব্যবধানে প্রায় ১০ বছর আগের নথি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিতে বলা হয়েছে। আদালত তদন্তে ‘নজরদারি’র পরিবর্তে ‘তদারকি’ করছে। বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ অভিষেকের আবেদনে সাড়া দেয়নি। তারা তাঁকে তদন্তে সাহায্য করতে বলেন। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এত গুরুত্বপূর্ণ তদন্তে ইডি যে তথ্য এবং নথি চেয়েছে তা কোনও ভাবেই উপেক্ষা করা যায় না। তদন্তের স্বার্থে তথ্য এবং নথি না দিলে তার প্রভাব সাঙ্ঘাতিক হতে পারে। এমনকি, এ নিয়ে জনসাধারণের মনে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, সিঙ্গল বেঞ্চ নিজের এক্তিয়ার লঙ্ঘন করেনি। অভিষেক ওই কোম্পানিতে দু’বছর ডিরেক্টর ছিলেন। বর্তমানে অভিষেক কোম্পানির সিইও। তিনি এক জন সাংসদও। ফলে তথ্য এবং নথি প্রকাশ করলে তাতে অসুবিধার কিছু হবে না বলে মনে করে আদালত। তাই সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ মতো অভিষেকের জমা দেওয়া সব নথি খতিয়ে দেখবে ইডি। তার পরে প্রয়োজন মনে করলে অভিষেককে দুর্গাপুজোর দিনগুলি ছাড়া ৪৮ ঘণ্টা আগে সমন পাঠাতে পারবে তদন্তকারী সংস্থা। যদিও ইডি সূত্রে খবর, আদালতের নির্দেশ মতো গত ৮ অক্টোবর নথি জমা দিয়েছেন অভিষেক।
উচ্চ আদালতের রায়ে অভিষেকের অস্বস্তি বজায় থাকে। এর থেকে সুরাহা পেতে সুপ্রিম কোর্টে গেলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। তবে তাঁর আবেদনের শুনানির দিন ক্ষণ এখনও স্থির হয়নি বলে শীর্ষ আদালত সূত্রে খবর। আগামী ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে দশেরার ছুটি রয়েছে। আদালত খুললে শুনানি দিন স্পষ্ট হবে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এর আগেও একাধিক বার সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন অভিষেক। তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়ে প্রাথমিকের মূল দু’টি মামলা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরিয়ে দেয় শীর্ষ আদালত। ওই মামলা থেকে রেহাই পেতেও তিনি সর্বোচ্চ আদালতে যান। সুপ্রিম কোর্ট তাঁর মামলাটি হাই কোর্টে ফেরত পাঠায়। পরে উচ্চ আদালতের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ শর্তসাপেক্ষে অভিষেককে রক্ষাকবচ দেন।