দার্জিলিং পুরসভায় বুধবারই নতুন চেয়ারম্যান ঘোষণা

দার্জিলিং পুরসভায় বুধবারই নতুন চেয়ারম্যান ঘোষণা। দার্জিলিং পুরসভায় বুধবারই নতুন চেয়ারম্যান ঘোষণা। চেয়ারম্যান রীতেশ পোর্টেলের বিরুদ্ধে অপসারণের দাবি তুলে বোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ। এদিনও শৈল শহরের সত্ত্বায় নতুন চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণার সম্ভাবনা। আদালতের নির্দেশে বুধবারই দার্জিলিং পুরসভায় সভাকক্ষে অনাস্থা তুলতে চলেছে দার্জিলিং পুরসভায় সংখ্যা গরিষ্ঠ ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রীক মোর্চা।

 

কাউন্সিলরেরা তরফে সকাল ১১ টা নাগাদ পুরসভার বোর্ড কক্ষে বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকে প্রথমে চেয়ারম্যান অপসারণের দাবি পেশ করবে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাউন্সিলরেরা। দার্জিলিং পুরসভা হামরো পার্টির অজয় এডওয়ার্ডের চেয়ার হাতছাড়া হতে চলেছে তা প্রায় পাকা। মূলত অজয় এডওয়ার্ড-এর অপসারণের দাবি তুলে বর্তমান বোর্ড ভেঙ্গে নতুন চেয়ারম্যানের নাম প্রস্তাব করা হবে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বিজিপিএমের তরফে।

 

তুষার দেশ দার্জিলিংয়ে ডিসেম্বর শেষের কনকনে শীতে রাজনৈতিক পারদ ক্রমশ চড়চ্ছে। তৃনমূলের সমর্থনের অনিতের ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রীক মোর্চা বর্তমানে দার্জিলিং পুরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। ইতিমধ্যেই সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরদের তরফে চিঠি প্রেরণ করাও হয়েছে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানকে।

 

যেখানে চেয়ারম্যানকে ১৩ই ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়। দার্জিলিং পুর নির্বাচনে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে রাজনীতিতে নবাগত অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি শৈলসহরে সারা ফেলে দেয়। তবে কার্যকারীতার অভাবে ক্ষোভ তৈরি হয় দলের অন্দরে। এরপরই জিটিএ নির্বাচনে বিজিপিএম বিরাট সাফল্যের পরই অসম্পূর্ণ বৃত্ত সম্পন্ন করতে নামে অনিত।

 

গত ২৮শে আগস্ট দার্জিলিং পুরসভায় হামরো পার্টির ছয় কাউন্সিলর বিজিপিএমে যোগদানের পরই ঘুরে যায় দার্জিলিং পুরসভার সত্ত্বার সমীকরন। দার্জিলিং পুরসভার ৩১টি আসনের মধ্যে তৃনমূলের ২ কাউন্সিলরদের বিজিপিএমকে সমর্থন করায় এবং পরবর্তীতে হামরো পার্টির ছেড়ে আসা ছয় কাউন্সিলরদের যোগদানে ১৬আসন নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।

 

এরপর ১৩ই ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ নির্ধারন করে বিজেপিএমমেরও তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের চিঠি দেওয়া হয়। তা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ার পরও অনৈতিকভাবে চেয়ার দখলে রেখেছে হামরো। যার কারণে পুনরায় সংখ্যাগরিষ্ঠ অনিতের দলের তরফে উপপ্রধান ইয়াচিং শেরপাকে চিঠি দেওয়া হয়। ২৮শে ডিসেম্বরই সেই চূড়ান্ত চিঠির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়। এর মাঝে আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করা হলে হাই কোর্টের তরফে চেয়ারম্যান অপসারণের দাবি তুলে বোর্ড ভেঙে নয়া বোর্ড গঠনে আইনি ছাড়পত্র দেওয়া হয় অনিতের দলকে।

 

অনিত থাপা জানান- দার্জিলিং পুরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সকাল ১১টায় বৈঠক থেকে চেয়ারম্যান অপসারণের প্রস্তাব পেশ করবে বিজিপিএম। এরপরই সভাকক্ষের আভ্যন্তরীণ ভোটাভুটির মাধ্যমে চেয়ারম্যানকে সরিয়ে পুরোনো বোর্ড ভেঙে দেওয়া হবে। সত্ত্বার হাত বদল হলে নতুন চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা করবো আমরা। পরবর্তীতে নতুন বোর্ড গঠন হবে।

 

এদিকে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ইতিমধ্যেই নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে দার্জিলিং পুরসভার ২ নাম্বার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দীপেন ঠাকুরিকে প্রস্তাব করতে চলেছে বিজিপিএম। দীপেন ঠাকুরির এবারেই প্রথম নির্বাচনে অংশ নিয়ে কাউন্সিলর হন। পুরোনো রাজনৈতিক রেকর্ড না থাকায় একেবারে স্বচ্ছভাবমূর্তি হিসেবেই তাকে প্রস্তাব করতে চলেছে দল। তার নিজস্ব ট্র্যাভেল এজেন্সির ব্যবসা রয়েছে।

 

যদিও এই পুরো বিষয়টিই নির্ভর করছে তৃনমূলের দুই কাউন্সিলরের সমর্থনের ওপর। তাদের সমর্থন মিললেই বিজিপিএমই সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করবে। এ বিষয়ে জিটিএ সিইও তথা বিজিপিএমে প্রতিষ্ঠাতা অনিত থাপা বলেন দু তিনটে নাম তালিকায় রয়েছে। তারমধ্যে দীপেনের নামও আছে। বুধবার দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদের নাম ঘোষণা করা হবে। তবে দীপেন স্বচ্ছ ভাবমূর্তি। তার বিরুদ্ধে কোথাও কোনো অভিযোগ নেই।

 

এদিকে এ সময়তে পাহাড়ের তৃনমূল নেতৃত্ব বিনয় তামাং, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা বিমল গুরুং ও হামরো পার্টির প্রতিষ্ঠাতা বর্তমান পুর সভার চেয়ারম্যান অজয় এডওয়ার্ড একই মঞ্চে আন্দোলনে সামিল হন। যাতে কুয়াশায় ঢাকা পাহাড়ের রাজনৈতিক উত্তাপ তুঙ্গে তুলেছে। ইতিমধ্যে বিনয় আন্দোলন মঞ্চ থেকে ইঙ্গিত দিয়েছেন তৃণমূলের পাঁচ নাম্বার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সঞ্জয় গুরুংকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে।