অতি বৃষ্টির ফলে জল ছাড়ল ডিভিসি, তাহলে কী পুজোর আগে বন্যা রাজ্যে?

অবশেষে স্বস্তির খবর দক্ষিণবঙ্গের, বাংলাদেশের পথে নিম্নচাপ

পুজোর আগে বৃষ্টি যেন কমারই নাম নেই। মুখ ভার আকাশের। আর টানা বৃষ্টির ফলে এবার জল ছাড়তে শুরু করেছে ডিভিসি। আর যার ফলে আশঙ্কায় গোটা বাংলা। প্রথম দফাতেই ১ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ল ডিভিসি। নিম্নচাপের জেরে ঝাড়খণ্ডে প্রবল বর্ষণ। পরিস্থিতি সামলাতে পাঞ্চেত, মাইথন ড্যাম থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। সোমবার রাত ৯টায় জল পৌঁছবে দুর্গাপুর জলাধারে।

আরও পড়ুনঃ মা ফ্লাইওভারের উপর ফের বেপরোয়া হয়ে দুর্ঘটনার কবলে একটি গাড়ি, মৃত ১

আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, নিম্নচাপ গতি খুব ধীর। এখনও ঝাড়খণ্ডেই অবস্থান করছে নিম্নচাপ। সহজে দুর্বলও হবে না নিম্নচাপ। ফলে আরও অন্তত ৩-৪ দিন প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা। তবে কি পুজোর আগে বন্যাই? দোলাচলে বাংলা। পুজোর বাকি আর হাতে গুণে মাত্র ১৭ দিন। কিন্তু আকাশের যা অবস্থা তাতে  আপাতত আশার কোনও খবর নেই। বরং, নাছোড় নিম্নচাপে আরও বৃষ্টির আশঙ্কা বাংলায়। সোম, মঙ্গল, বুধ তো বিক্ষিপ্ত ভারী বৃষ্টি চলবেই! আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, বুধবার বৃষ্টির তীব্রতা আরও বাড়তে পারে।

 

হাওড়া অফিসের সুত্রে খবর, বুধবার দক্ষিণবঙ্গের ৯ জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এর মধ্যে কোনও কোনও জেলায় টানা ৩-৪ দিন ভারী বৃষ্টি হতে পারে। নিম্নচাপের প্রভাবে ঝাড়খণ্ডেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি চলবে। ফলে ডিভিসি জল ছাড়লে প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে নিম্ন দামোদর উপত্যকায়। বুধবার পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি চলবে উত্তরবঙ্গেও।

 

আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, বর্ষার শেষে যদি ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয়, তাহলে সেটা খারাপ ইঙ্গিত। কারণ নদীগুলিতে এ সময় জল বেশিই থাকে, তারওপর ভারী বৃষ্টিতে জল। আর এদিকে নিম্নচাপ এখন হঠাত  করেই দুর্বল হচ্ছে না। সরছেও না। সোমবারও নিম্নচাপ ঝাড়খণ্ডের ওপরেই রয়েছে। সেখানে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। পাঞ্চেতে তেনুঘাট ড্যাম ও মাইথনে তিন্নাইয়া ড্যাম থেকে জল আসে। দুটো জলাধারের জল যখন এখানে পড়ছে, স্বাভাবিকভাবেই জলস্তর বাড়ছে।

 

নির্দিষ্ট বহন ক্ষমতা পেরিয়ে গেলেই জল ছাড়া হয়। এতটাই এখন জল জমে রয়েছে, যে প্রথম দফাতেই এক লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। সব জল আজ রাতেই দুর্গাপুর ব্যারেজে ঢুকবে। ফলে সেখান থেকেও জল ছাড়া বাড়াতে হবে। সার্বিকভাবে এই দুই ড্যামের জল দামোদর হয়ে নীচে নেমে হাওড়া, উদয়নারায়ণপুর হয়ে চলে আসবে। আবার বাংলায় নদী তীরবর্তী বাঁধগুলোর এমনিই শোচনীয় অবস্থা। তাতে পুজোর আগে ব্যাপক শঙ্কা।

 

অন্যদিকে, টানা বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত ঝাড়গ্রাম। ক্রমাগত বাড়ছে ডুলুং নদীর জল। ঝাড়গ্রাম জেলা সদরের সাথে জামবনি ব্লকের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। রাস্তায় লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে লরি। জামবনি ব্লকের চিল্কিগড়ে ডুলুং নদীর উপর থাকা কজওয়ের উপর দিয়ে বইছে জলের স্রোত। এই রাস্তার উপর দিয়ে পণ্য বাহি লরি যাতায়াত করে ভিনে রাজ্যে। ওড়িশা-ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা থমকে যাওয়ায় সমস্যায় সাধারণ মানুষ।

en.wikipedia.org