ফ্ল্যাট দেওয়ার নাম করে প্রতারণার মামলায় অভিনেত্রী নুসরত জাহানকে ১২ সেপ্টেম্বর তলব করল ইডি।

 ফ্ল্যাট দেওয়ার নাম করে প্রতারণার মামলায় অভিনেত্রী নুসরত জাহানকে ১২ সেপ্টেম্বর তলব করল ইডি।
 ফ্ল্যাট দেওয়ার নাম করে প্রতারণার মামলায় অভিনেত্রী নুসরত জাহানকে ১২ সেপ্টেম্বর তলব করল ইডি।

ফ্ল্যাট দেওয়ার নাম করে প্রতারণার মামলায় অভিনেত্রী নুসরত জাহানকে ১২ সেপ্টেম্বর তলব করল ইডি। আগামী মঙ্গলবার তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাঁর সঙ্গেই তলব করা হয়েছে অভিনেত্রী রূপলেখা মিত্রকে। তাঁকে ১৩ সেপ্টেম্বর হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তলব করা হয়েছে রাকেশ সিংকেও। গত সপ্তাহেই ইসিআইআর করে মামলা শুরু করে ইডি। প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে ইডি মনে করেছে, নুসরতকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। দিল্লি থেকে অনুমোদন পাওয়ার পরই তলব। উল্লেখ্য, ‘সেভেন সেন্সেস ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড’র ডিরেক্টর ছিলেন রাকেশ সিং, নুসরাত জাহান, রূপলেখা মিত্র-সহ মোট ৮ জন।

 

এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা বলেন, “৪০০ জন ব্যাঙ্কের কর্মচারীর সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা করে চুরি করে দামী ফ্ল্যাট কিনবেন, আর তাঁরা রাস্তায় হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াবেন! এরপরও ওঁ কীভাবে দাবি করেন, ইডি তাঁকে ডাকবে না? কলকাতা পুলিশ আগেই তদন্ত করে বলেছিল, এই মামলায় নুসরতের যোগ স্পষ্ট। ইডিকে পদক্ষেপ করতেই হবে। ইডি পদক্ষেপ না করলে, আমরা আদালতে যাব।”

 

 

২০১৪-১৫ সালে নুসরত যে সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন, সেই ‘সেভেন সেন্সেস ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড’ব্যাঙ্ক কর্মীদের সঙ্গে ফ্ল্যাট দেওয়ার নাম করে প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। সংস্থারই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের অবসরপ্রাপ্ত বহু কর্মী অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে টাকা জমা করেছিলেন ফ্ল্যাট পাওয়ার জন্য। অভিযোগ, প্রথমে ২ কামরার ফ্ল্যাট দেওয়ার নাম করে ৫০০ জনের কাছ থেকে টাকা তোলা হয়েছিল। পরে নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর অন্য জায়গায় অ্যাপার্টমেন্ট বানানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, সেখানে তিন কামরার ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা বলা হয়।

 

 

 

যখন এ অভিযোগ সামনে এসেছিল,তখন নুসরত নিজেই সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেছিলেন, “ওই কোম্পানি থেকে আমি একটা লোন নিয়েছিলাম। ১কোটি ১৬ লক্ষ ৩০ হাজার ২৮৫ টাকা। ২০১৭ সালে সুদ-সহ ১ কোটি ৪০ লক্ষ ৭১ হাজার ৯৯৫ টাকা কোম্পানিকে ফেরত দিই। সব ব্যাঙ্ক ডিটেইলস আমার কাছে আছে।”

কিন্তু এত বছরেও অবসরপ্রাপ্ত কোনও ব্যাঙ্ককর্মী ফ্ল্যাট পাননি। নুসরতের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রতারণার টাকায় তিনি পাম অ্যাভিনিউয়ের একটি ফ্ল্যাট কেনেন। প্রতারিতরা প্রথমে গড়িয়াহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ, পুলিশ মামলা নেয়নি। আলিপুর আদালতে গিয়ে মামলা ফাইল করে। সেসময় আদালত দু’বার নুসরতের বিরুদ্ধে সমন জারি করে। অভিযোগ, সেসময়ে হাজিরা এড়িয়েছিলেন নুসরত। এবার বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডার প্রতারিত ব্যাঙ্ক কর্মীদের অভিযোগ সামনে আনেন। এবার সেই মামলাতেই ইডি ডাকল নুসরতকে।

 

 

এরপরও সাংবাদিকদের সামনে যশকে পাশে নিয়ে নুসরত দাবি করেছিলেন, তাঁকে ইডি ডাকবে না। কিন্তু তাঁকে ইডি ডাকল, আগামী মঙ্গলবার হাজিরার নির্দেশও দিল। প্রসঙ্গত, ফ্ল্যাট দেওয়ার নাম করে প্রতারণার একাধিক অভিযোগ আজকাল প্রকাশ্যে আসছে। তা নিয়ে সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অনেক ব্ল্যাক লিস্টেড প্রোমোটার রয়েছে। আমার কাছে, পুলিশ কমিশনারের কাছে, এমনকি ডিজির কাছেও চিঠি আসে। আমি সেই চিঠিগুলো পাঠিয়ে দেব, ধরে ব্ল্যাক লিস্টেড করে দেবেন।” এবার নিজের দলের সাংসদের বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগ ওঠায় তিনি কী পদক্ষেপ করেন, সেটাই দেখার।

 

 

আরও পড়ুন :-দেব খুবই অসুস্থ। সবই যে রটনা, তা জানালেন দেবের সহ-অভিনেতা অম্বরীশ ভট্টাচার্য।

 

 

 

নুসরতের এই দাবি সম্পর্কে কী বলছেন সংস্থার আরেক কর্তা রাকেশ সিং? তাঁর বক্তব্য, “আমাদের কোম্পানি নুসরত জাহানকে কোনও ঋণ দেয়নি। তিনি রিজাইন দিয়েছিলেন ২০১৭ সালে। এই ৬ বছরের তাঁর সঙ্গে আমাদের কোনও যোগাযোগ নেই। আমাদের আর প্রয়োজন নেই। ও একাকী কিছু বিষয় হ্যান্ডেল করেছে। ও যেটা ভাল মনে করেছেন, করেছেন।” তিনি আরও দাবি করেন, “আমি নুসরতকে যতটুকু চিনেছি, কাজ করতে গিয়ে, অ্যাকাউন্টসের ব্যাপারে ওঁ খুব দুর্বল। আর ভাল করে বোঝা উচিত ছিল ওঁর। ওঁর নিজেকেই ক্রস চেক করা উচিত ছিল।”