জুন: ভারতের কাছে বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে হারের পর তীব্র আক্রমণের মুখে পড়লেন পাকিস্তানের অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। বিরাট কোহলিদের কাছে এমন অসহায় আত্মসমর্পণ মেনে নিতে পারছেন না প্রাক্তন পাক তারকারা। শোয়েব আখতার তো আবার সরফরাজকে সরাসরি ‘নির্বোধ’ আখ্যা দিয়েছেন। টসে জিতে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে শুরু করে ম্যাচে তাঁর একাধিক বেহিসেবি পদক্ষেপ হতাশ করেছে আখতার, ওয়াসিম আক্রাম, মহম্মদ ইউসুফ, মহসিন খানদের। তাই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে ৮৯ রানে হারের জন্য মূলত সরফরাজকেই কাঠগোড়ায় তুলেছেন তাঁরা।
রবিবার ম্যাঞ্চেস্টারে পাকিস্তানকে সব বিভাগেই টেক্কা দিয়ে দাপটের সঙ্গে ম্যাচ জিতেছে ভারতীয় দল। প্রচুর রান দিয়েছেন পাক বোলাররা। ফিল্ডিংয়েও ফুটে উঠেছে তাদের দৈন্যতা। যার মধ্যে অন্তত দুটি সহজ রান-আউটের সুযোগ নষ্ট করেছে তারা। যার মধ্যে একবার রহিত শর্মাও নিশ্চিত রান-আউটের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। তারপর আর তাঁকে থামানো যায়নি। ১৪০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে ভারতের জয়ের নায়ক হয়ে ওঠেন রহিত। পুরো ম্যাচে পাকিস্তান খেলোয়াড়দের হতশ্রী দশা ব্যথিত করেছে শোয়েব আখতারকে। ক্ষোভের সুরে রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস বলেছেন, ‘একেবারে মাঝারি মানের দল। ওদের কাছ থেকে বেশি কিছু আশা করবেন না।’ এরপর অধিনায়ক সরফরাজকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে শোয়েব বলছেন, ‘২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারত যে ভুলগুলো করেছিল, সেই একই ভুল এবার বিশ্বকাপে করল পাকিস্তান। বলা ভালো, সরফরাজের একাধিক ভুল সিদ্ধান্তই দলকে ডুবিয়েছে। ও যে এতবড় নির্বোধ, তা আমার জানা ছিল না। টস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল এই ম্যাচে। আর সেটা জিতেও কাজে লাগাতে পারল না সরফরাজ। টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠানো হল। সরফরাজ বোধহয় ভুলে গিয়েছিল যে, আমরা খুব একটা ভালো রান তাড়া করতে পারি না। আমাদের আসল শক্তি বোলিং। আগে ব্যাটিং করে পাকিস্তান যদি ২৬০ রানও করত, তাহলেও বোলাররা ভারতকে থামাতে পারত। বলতে দ্বিধা নেই, বুদ্ধিহীন নেতৃত্ব করেছে সরফরাজ। অধিনায়ক হিসেবে সরফরাজের পারফরম্যান্স ছিল অত্যন্ত দুঃখজনক ও হতাশাব্যঞ্জক। আমি ওর মধ্যে ইমরান খানের ছায়া দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার ভাবনাটাই ভুল ছিল।’ টিম ম্যানেজমেন্ট ও কোচ মিকি আর্থারকেও ছেড়ে কথা বলেননি প্রাক্তন পাক বোলারটি। শোয়েবের কথায়, ‘আমাদের টিম ম্যানেজমেন্টও নির্বোধ। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে গিয়ে সরফরাজ দশম শ্রেণি পাশ করা কিশোরের মতো আচরণ করেছে। ম্যাচ কী ভাবে জিততে হয়, তা জানেই না এরা।’
শোয়েব আখতারের সুরে সুর মিলিয়ে ওয়াসিম আক্রাম বলেন, ‘ভারতের বিরুদ্ধে হাইভোল্টেজ ম্যাচের চাপটাই নিতে পারেনি আমাদের ছেলেরা। আর সে জন্যই অসংখ্য ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরফরাজ। টসে জিতে আগে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠিয়ে শুরতেই সে ম্যাচটা প্রতিপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছিল। সেখান থেকে আর ফিরে আসার পথ ছিল না। সব বিভাগেই আমাদের টেক্কা দিয়ে হাসতে হাসতে জিতে মাঠ ছেড়েছে ভারত। তাছাড়া বিশ্বকাপের জন্য নির্বাচিত পাকিস্তান দলে ভারসাম্য বলেও কিছু নেই। তাই নির্বাচকরাও দায় এড়াতে পারেন না।’ পাকিস্তানের আর এক প্রাক্তন অধিনায়ক মহম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ মানেই অন্য লড়াই। কিন্তু আমাদের ছেলেদের মানসিক ও শরীরি ভাষায় সেই তেজ দেখতে পাইনি। ওরা যেন মাঠে নামার আগেই হার স্বীকার করে নিয়েছিল। আর তাতে মাত্রা জুগিয়েছে টসে জিতে রান তাড়া করার পরিকল্পনা। এমন একটা উত্তেজনার ম্যাচে রান তাড়া করে জেতা চাট্টিখানি কথা নয়।’ প্রাক্তন টেস্ট ওপেনার মহসিন খান বলেন, ‘ভারত যতই শক্তিশালী দলই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে একটা ভালো লড়াই আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু দেখলাম, বাস্তবে আমাদের টিমে লড়াকু স্পিরিটটাই নেই। মাঠে পাকিস্তান খেলোয়াড়দের মধ্যে কোনও রকম সংকল্প, তাগিদ বা দায়বদ্ধতা আমার অন্তত চোখে পড়েনি। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে।’
‘নির্বোধ’ সরফরাজকে তুলোধোনা করলেন আখতার, আক্রামরা
‘নির্বোধ’ সরফরাজকে তুলোধোনা করলেন আখতার, আক্রামরা
Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram