পুরুষদের তুলনায় হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি মহিলাদের! গবেষণায় চাঞ্চল্য

পুরুষদের তুলনায় হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি মহিলাদের! গবেষণায় চাঞ্চল্য ,চাঞ্চল্যকর তথ্য দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা বাড়ছে মহিলাদের মধ্যে। প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ হৃদযন্ত্রের নানা সমস্যা। এই সংখ্যা উত্তোরত্তর বাড়ছে। আর তাই রোগের ধরণ, এবং বিস্তার নিয়ে নানা গবেষণা চলছে। আর সেখানেই উঠে আসে কিছু অবাক করে দেওয়ার মতো তথ্য। একটি নতুন গবেষণা জানাচ্ছে, পুরুষদের তুলনায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত মহিলার সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। ৮৮৪ জন হার্ট অ্যাটাকে মৃত রোগীর পরিসংখ্যান নিয়ে গবেষণায় দেখা গিয়েছে এর মধ্যে ২৭ শতাংশই মহিলা।

 

 

 

 

মার্কিন একটি গবেষণা মহিলাদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলি তুলে ধরেছে। বুকে ব্যাথা, আনচান করা, পিঠে এবং গলায় ব্যাথা, হজমের সমস্যা, বুকজ্বালা করা, মাথা ঘোরা, বমি, ঘোরের মধ্যে চলে যাওয়া, শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণগুলি হার্ট অ্যাটাকের প্রথম ধাপ হতে পারে মহিলাদের ক্ষেত্রে। মা ফুলে যাওয়া, তলপেটে ব্যাথাও মহিলাদের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হতে পারে। এমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

 

 

 

 

২০২৩ সালে এই নিয়ে পর্তুগালেও একটি সমীক্ষা চালানো হয়। যেখানে বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণে উঠে আসে এমনই কিছু চমকপ্রদ তথ্য। ইউরোপিয়ান সোসাইটি অফ কার্ডিওলজির চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, হৃদরোগে আক্রান্ত মহিলাদের সংখ্যা প্রতিবছরই বাড়ছে। গবেষণা জানাচ্ছে, ৮৮৪ জন হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে দেখা গিয়েছে এস টি সেগমেন্ট এলিভেশন মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশন (STEMI)। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এটিই হৃদরোগের সবচেয়ে ভয়ংকরতম অবস্থা। এর জেরে দীর্ঘদিন ধরে হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভোগার সম্ভাবনা থাকে। এর রোগে আক্রান্তদের করোনারি আর্টারি ১০০ শতাংশ ব্লক হয়ে যায়। হৃদযন্ত্রে রক্ত পৌঁছনো বন্ধ হয়ে যায় রোগীদের। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অ্যাঞ্জিওপ্ল্যাস্টি না করলে মারাত্মক ঝুঁকি হতে পারে।

 

 

 

 

গবেষকরা জানাচ্ছেন, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পরিমাণ ২.৮ শতাংশ বেশি। এর কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে উচ্চ রক্তচাপ, সুগার, স্ট্রোক। পুরুষদের ক্ষেত্রে সবেচেয় ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায় ধূমপানের অভ্যাস।যাদের উপর এই গবেষণা চালানো হয়েছিল, দেখা গিয়েছে ৩০ দিনের মধ্যে ১১.৮ শতদাংশ মহিলা হার্ট অ্যাটাকে মারা গিয়েছেন। সেখানে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪.৬ শতাংশ পুরুষের। আর পাঁচ বছরে মহিলাদের মৃত্যুর পরিসংখ্যান ৩৪.২ শতাংশ।

 

 

 

 

পাশাপাশি, মেজর অ্যাডভার্স কার্ডিয়াক ইভেন্ট অথবা MACE পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। এর জেরে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বাড়ে। হার্ট ফেলের জেরে মৃত্যুও হয় অধিকাংশের।

 

 

 

 

আরও পড়ুন-   রবিতে আছড়ে পড়বে বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় সুপার টাইফুন মাওয়ার!

 

 

 

৪৩৫ জন রোগীর উপর একটি গবেষণা চালানো হয় এই নিয়ে। সকলেরই বয়স ৫৫ বছরের উপরে। দেখা যায় ৩০ দিনের মধ্যে ১১.৩ শতাংশ মহিলা হার্ট ফেলিওরে মারা গিয়েছেন। আর এক মাসে ৩ শতাংশ পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। পাঁচ বছরের মধ্যে মারা গিয়েছেন ১৫.৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৪.১ শতাংশ মহিলা। মেডিক্যাল নিউজ টুডে-র সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, MACE-তে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে ১৭.৬ শতাংশ বেশি।