কেন উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটিতে রাজ্যের প্রতিনিধি? ব্যাখ্যা দিলেন শিক্ষামন্ত্রী , ‘ইউনিভার্সিটি অ্যামেন্ডমেন্ট ল বিল’ নিয়ে বিধানসভায় তুমুল শোরগোল। বিরোধী শিবির বিজেপি পাঁচ সদস্যের সার্চ কমিটিতে আপত্তি জানায়। বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ সওয়াল করেন, রাজ্য সরকার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এই বিল আনা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার জন্য চেষ্টা চলছে। তিনি প্রশ্ন করেন, “২০১৮ সালে একবার সংশোধন হয়েছে আবার কেন? ইউজিসির গাইডলাইন আপনারা মানেন না। আপনাদের যখন যেরকম ইচ্ছা সেরকম করেন।”
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে ব্রাত্য বসুর অভিযোগ, এমন এক জনকে উপাচার্য করা হচ্ছে যাদের সঙ্গে শিক্ষার কোনও সম্পর্ক নেই। বিলে বলা আছে, কমপক্ষে ১০ বছর তাঁকে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় পড়াতে হবে। কিন্তু রাজ্যপাল যাঁদের নিয়োগ করছেন, তাঁরা কেউই কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত নন। তাঁর বক্তব্য, “কোন আইনের বলে তারা এটা করছেন আমাদের জানা নেই।” তখনই বিধানসভায় শোরগোল পড়ে যায়। বিজেপি বিধায়করা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বিজেপির বিধায়করা চিৎকার করে বলেন, “হাইকোর্টে তো রাজ্যপালের পক্ষে রায় দিয়েছেন।”
তখনই শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “কী করা যায়, সেটাও আমরা খতিয়ে দেখছি।” এদিন বিধানসভায় বিল সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো নিয়ে ভোটাভুটি হয়। এক্ষেত্রে ১২০ টি ভোট পায় শাসক দল। বিজেপি ৫১। একজন ভোটদানে বিরত। কিন্তু বিলটিকে আইনে পরিণত গেলে রাজ্যপালের সম্মতি লাগবে, তাঁর স্বাক্ষর লাগবে। রাজ্যপাল যাতে তাতে সই না করেন, এখন সেই চেষ্টাই চালাচ্ছেন বিজেপি বিধায়করা। বিজেপরি পরিষদীয় দলনেতা মনোজ টিগ্গার তরফ থেকে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের দ্বারস্থ হবেন।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, “ইউজিসি নির্দেশিকা সঙ্গে সঙ্গে আমরা মানতে বাধ্য নই। তবে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে ইউজিসি কিছু গাইডলাইন মানতে হবে। সেই নির্দেশ মেনেই এই পরিবর্তন।”
বিধানসভায় এই নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলে। কেন এই বিল, তার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, “এক উপাচার্য থেকে আরেক উপাচার্যের নিয়োগের ক্ষেত্রে এক বছর সময় রাখা হয়েছে। এই জন্যই এই বাড়তি সময় রাখা হয়েছে যাতে ইউজিসি প্রতিনিধি আসে না। অধিকাংশ সময় তাদের কোন প্রতিনিধি আসেন না।”
শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, ইউজিসি তাদের নতুন নির্দেশিকায় বলেছে একজন প্রতিনিধি রাখতে হবে সার্চ কমিটিতে। এতদিন তিন জনের ছিল। একজন রাখলে সংখ্যাটা চার হবে। চারজনের কোন কমিটি হয় না। সে কারণেই রাজ্য সরকারের একজন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।
এরপর বিজেপির বিধায়কদের প্রশ্ন ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় একজন প্রতিনিধি কেন থাকবেন না? শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “ইউজিসির গাইডলাইন হল, যে বিশ্ব বিদ্যালয় উপাচার্য হবে তার কোনও প্রতিনিধি রাখা যাবে না।”
বিরোধীদের সবচেয়ে বেশি আপত্তি ছিল রাজ্য সরকারের একজন প্রতিনিধি রাখা নিয়ে। জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির তিন জন প্রতিনিধি থাকে, আর এখানে দু’জন প্রতিনিধি থাকলেই আপত্তি!
আরও পড়ুন – শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত মারাত্মক ঝড়জলের সম্ভাবনা৷ তবে তাতে গরম কমার আশা…
আলোচনায় উঠে আসে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার প্রসঙ্গও। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “শিক্ষা স্বাধিকারের পক্ষে আমরা। একইসঙ্গে আমরা চাই, এমন মানুষকে উপাচার্য করা হোক, যিনি শিক্ষার আঙিনার সঙ্গে যুক্ত। কোন প্রাক্তন আইপিএস বা বিচারপতির দশ বছরের শিক্ষকতা করার যোগ্যতা আছে কি?”