দুষ্কৃতীর ছুরির আঘাতে জখম সিভিক ভলান্টিয়ার। রাজ্য জুড়ে যেন বেড়েই চলেছে অপরাধ প্রবণতা।আর অপরাধীদের যদি মানসিক ভারসাম্যে সমস্যা থাকে তাহলে তো কথাই নেই,যখন তখন ঘটতে পারে মারাত্মক ভয়াবহ ঘটনা আর হল ও তাই। একেবারে ভর সন্ধ্যা বেলায় কল্যাণী মেন স্টেশনে জিআরপি-র এক কনস্টেবল ও এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে ছুরি মেরে জখম করল এক দুষ্কৃতী! কিন্তু তাতেই না থেমে রাত সাড়ে ৮টা থেকে পৌনে ৯টার মধ্যেই আবার সে কল্যাণী আইটিআই মোড়ের কাছে পৌঁছে গিয়ে পরপর তিন জন ব্যাক্তিকে ছুরি মারে বলে সূত্রের খবরে জানা গেছে। শেষে লোকজন তাকে ধরে ফেলে,মারধরও করে ও পুলিশের হাতে তুলে দেয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ জানিয়েছে,ব্যাক্তির নাম ইয়াকুব বিশ্বাস। নাকাশিপাড়া থানার নাগাদি পূর্বপাড়ায় বাস তার।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান -তার মানসিক ভারসাম্যে সমস্যা আছে। এদিকে,কল্যাণী জিআরপির কনস্টেবল শোভন ঘোষ ও সিভিক ভলান্টিয়ার বিপ্লব দত্তকে আগেই জেএনএম হাসপাতালে আনা হয়েছিল। রাতে আইটিআই মোড়ে ছুরিতে জখম ধ্রুবব্রত চট্টোপাধ্যায়, অনন্তকুমার পাড়ুই এবং দুধকুমার সরকারকে জেএনএম হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সূত্রের খবর,বিপ্লব দত্তের অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়েছিল তাই তাঁকে কলকাতায় রেফার করা হয়েছে।এদিকে,জিআরপি সূত্রের খবর অনুযায়ী, কল্যাণী মেন স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ঢুকতেই উল্টো দিকে লাইনে লাফিয়ে নামে এক জন।
তা দেখে শোভন আর বিপ্লব তাকে প্ল্যাটফর্মে উঠে আসতে বলেন। কিন্তু তার কথাবার্তায় অসঙ্গতি লক্ষ্য করেই তাকে তাঁরা অফিসে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সে হঠাৎই হাতে থাকা একটি কালো প্লাস্টিকের ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে শোভনের বুকে বসিয়ে দেয়। বিপ্লব থামাতে গেলে তাঁর পেটেও ছুরি মারে। হকার রা জানিয়েছেন, সে একাই ছিল। দু’জনকে কুপিয়ে সে অস্ত্রটি বনবন করে ঘোরাতে থাকে।তাই দেখে লোকজন আতঙ্কে ছুটতে থাকে ও অনেকে পড়েও যান।আর ঠিক তখনইএক বয়স্ক হকারকে ধাক্কা মেরে সে পালিয়ে যায়। ওই হকারকেও বর্তমানে জেএনএমে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।সেই সময়ে কল্যাণী জিআরপি-র ওসি মুকুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “স্টেশন এলাকায় সিসিটিভি লাগানোর কাজ চলছে। নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হবে। অপরাধীর খোঁজ চলছে।”কিন্তু আতংক এখানেই শেষ হয় না।
আর ও পড়ুন টাকি রোডে নজরে সিসিটিভি, নাকা চেকিংয়ে গাঁজা ফেনসিডিল আটক
সেই দুষ্কৃতি আবার চলে যায় রাতের আইটিআই মোড়ে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোড়ের কাছেই বিরিয়ানি বিক্রি করতেন মাঝবয়সি ধ্রুবব্রত চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু এই ছেলেটি গিয়ে তাঁর ঝোলানো ব্যাগে হাত দিচ্ছিল। তিনি ব্যাপার কী জানতে চান আর অমনি সে তাকে অস্ত্র বার করে কোপ বসিয়ে দেয়। তার পর পুরসভার দিকে দৌড়তে থাকে। পথে বাধা দিতে গিয়ে জখম হন অনন্তকুমার পাড়ুই ও দুধকুমার সরকার। কিন্তু কিছু পরেই এলাকার লোকের হাতে ধরা পড়ে যান তিনি। সূত্রের খবর,বুধবার সকালে কল্যাণী মেন স্টেশন ও আইটিআই মোড়ে এই ঘটনা নিয়ে সবার মুখেচোখে আতঙ্কের ছাপ দেখা যায়মএইভাবে আইন শৃংখলা শেষ করে দিয়ে দুষ্কৃতীর ছুরি চালানো নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। অভিযুক্ত ইয়াকুবকে বুধবার রানাঘাট আদালতে তোলা হবে বলে সূত্রের শেষ খবরে জানা গেছে।
