বৃদ্ধা সেজে পৌঁছে গিয়েছিলেন অভিষেকের কাছে, অবশেষে জানা গেল কে এই যুবতী ? বুধবার শাসকদলের ‘সেকেন্ড ইন কম্যান্ড’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তখন সবে সভা শেষ করে মঞ্চ থেকে নামছিলেন, তখনই চিৎকার করেছিলেন এক বৃদ্ধা। পরনে সাদা থান, মাথায় সাদা উসকো খুশকো চুল! এক বৃদ্ধা কেন এই ভাবে চিৎকার করছেন, হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন সকলেই। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ডেকে একান্তে কথা বলেছিলেন। আসলে ওই মহিলা কে? এক দিন পেরিয়ে জানা গেল তাঁর আসল পরিচয়। বয়স বড়জোড় মধ্য ত্রিশ। নাম প্রিয়াঙ্কা গোস্বামী। রামনগরে তাঁর বাড়ি।
বুধবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওন্দার সভার দর্শকাশনে একেবারে সামনের সারিতে বসে থাকা মহিলার বয়স যে মধ্য ত্রিশ হতে পারে, তা ঘুনাক্ষরেও কল্পনা করতে পারেননি কেউ। নিরাপত্তারক্ষীরাও ঘুনাক্ষরে বুঝতে পারেননি বৃদ্ধার ছদ্মবেশে যিনি বসে রয়েছেন, তাঁর বয়স হতে পারে মধ্য ত্রিশ। অভিষেকের বক্তব্য শেষ হতেই তিনি ব্যারিকেড টপকানোর চেষ্টা করতেই নজরে পড়ে নিরাপত্তারক্ষীদের। তাঁকে আটকে দেওয়া হলেও তাঁর চিৎকার ততক্ষণে অভিষেকের নজর টেনেছে। শেষ পর্যন্ত তাঁকে ভিআইপি রেস্ট রুমে ডেকে তাঁর কথা শোনালেন অভিষেক। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে মহিলার অভিযোগে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে তৃণমূলের ওন্দা ব্লক নেতৃত্ব।
বাঁকুড়ার রামসাগর গ্রামের গৃহবধূ প্রিয়াঙ্কা গোস্বামী রামসাগর বাজারে ফাস্টফুডের ব্যবসায়ী। বছর দুয়েক আগে তাঁকেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় চাকরি দেওয়ার নাম করে ওন্দা ব্লক তৃণমূলের তৎকালীন সহ সভাপতি আশিস দে ৯৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ। কাজে যোগ দেওয়ার পরে পরেই প্রিয়াঙ্কা বুঝতে পারেন সংস্থাটি ভুয়ো। এরপরই আশিস দে’র কাছে তিনি দেওয়া টাকা ফেরত চান বলে অভিযোগ। অভিযোগ বারবার বলার পরেও আশিস দে টাকা ফেরত দেননি। এরপর তিনি ওন্দা থানার দ্বারস্থ হন। থানায় অভিযোগ করতেই আশিস দে’র মদতে তাঁর অনুগামীরা প্রিয়াঙ্কার দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে ও প্রিয়াঙ্কার স্বামীকে মারধর করেন বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন – পঞ্চায়েতের আগে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক, কোন প্রকল্পে কত খরচ মন্ত্রীদের কাছ থেকে…
প্রিয়াঙ্কার দাবি আশিস এলাকায় প্রভাবশালী। তাই ছদ্মবেশ না নিলে তৃণমূল নেতারা তাঁকে সভায় ঢুকতে দেবেন না, এই আশঙ্কাতেই এমন ছদ্মবেশ নিয়েছিলেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কথা শুনেছেন বলে জানান প্রিয়াঙ্কা। তিনি পুলিশ সুপারকে বিষয়টি দেখার জন্য নির্দেশ দেন।