করোনা কমতেই কি বাড়ছে চিকেন পক্সের দাপট? শহরে বাড়ছে মৃত্যু, সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা, করোনা পর্বের আগেও জলবসন্ত বা চিকেন পক্সের দৌরাত্ম যথেষ্ট ছিল। ২০১৯-২০ সালে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ৩৫ জন মারা গিয়েছিল চিকেন পক্স আক্রান্ত হয়ে। তবে করোনা অতিমারির সময় চিকেন পক্সের দাপট অনেকটাই কমে গিয়েছিল৷ করোনা চলে যেতেই আবার পক্সের দাপট বেড়ে গেল। তবে পরের পর মৃত্যুর জন্য অবশ্য পক্স নিরাময়ে ঘরোয়া টোটকার উপরে ভরসা করাকেও দায়ী করছেন চিকিৎসকরা৷
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২২-এর নভেম্বর থেকে এ বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ছোঁয়াচে চিকেন পক্সনিয়ে ৫৮ জন ভর্তি হয়েছিলেন৷ এর মধ্যে ডিসেম্বরে তিনজন এবং জানুয়ারি মাসে ৯ জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের অর্ধেকেরও বেশি পঞ্চাশোর্ধ৷ প্রায় প্রত্যেকেরই কম বেশি কো মর্বিডিটি ছিল বলেও অবশ্য দাবি চিকিৎসকদের। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আক্রান্ত এবং মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই পুরুষ। বেশিরভাগ রোগী প্রাণঘাতী নিউমোনিয়া ও এনসেফ্যালাইটিস নিয়ে ভর্তি হয়।
চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গত ৩ ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় উত্তর ২৪ পরগণার বাসিন্দা ৪৭ বছর বয়সি খাতিব আলির৷ ৭ ফেব্রুয়ারি উত্তর ২৪ পরগণার বাসিন্দা প্রশান্ত মণ্ডলও (৫৭) চিকেন পক্স আক্রান্ত হয়ে মারা যান৷ ৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতার হালতুর বাসিন্দা ৩৭ বছরের অর্পিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু হয়। তবে মৃতেরা প্রত্যেকেই অনেক দেরি করে হাসপাতালে এসেছিলেন বলে দাবি আইডি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
আরও পড়ুন – চুরি করে পালাচ্ছিল নাবালক, লুচি-তরকারি খাইয়ে বাড়ি পাঠালেন ব্যবসায়ীরা
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, জল বসন্ত বা চিকেন পক্স হলে বহু ক্ষেত্রে এখনও মানুষ ঘরোয়া টোটকায় ভরসা রেখে চলে, যেটা অত্যন্ত ঝুঁকির। জ্বরের পাশাপাশি চামড়ায় জল ফোস্কার মতো গুটি বেরোলে মানুষ বুঝে যান তা জল বসন্তের উপসর্গ৷ অনেকেই বাড়িতে রোগীকে মেথি ভেজানো জল খাওয়ানোর মতো টোটকায় ভরসা রাখেন৷ চিকিৎসকরা বলছেন, এই টোটকা প্রয়োগ না করে দ্রুত চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া উচিত।। চিকিৎসকের কাছে গেলে দু’ তিন দিনের মধ্যেই রোগীর শরীরে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ পড়ে যায়, যাতে চিকেন পক্স অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এখনও যাঁদের পক্স হয়নি, তাঁদের জল বসন্তের টিকা ভ্যারিসেলা ভ্যাকসিন নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।