প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার সিবিআই ডিরেক্টরের কাছে রিপোর্ট তলব করল আদালত। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, আগামী ৪ অক্টোবর সিবিআই ডিরেক্টর প্রবীণকুমার সুদকে রিপোর্ট দিতে হবে। ওই দিন দিল্লি থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাঁকে শুনানিতে হাজিরা দিতে হবে। তদন্তকারী অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা করে রিপোর্ট দেবেন সিবিআই ডিরেক্টর।
আরও পড়ুনঃ হাইকোর্টে ভর্ৎসনার পর, অবশেষে শিক্ষিকা পদে নিয়োগপত্র পেলেন শিলিগুড়ির অনামিকা
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, বাইশের ২৭ সেপ্টেম্বর সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। প্রায় এক বছর হতে চলল, সিবিআই এখনও কোনও উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে পারনি। সত্য সামনে আনতে তাদের অনীহা চোখে পড়েছে। তাই সিবিআই ডিরেক্টরকে আদালতের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘আপনাদের কাজ কি মানুষকে বোকা বানানো? গতকাল শুনানিতে দেখলাম অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সিবিআই করেনি। আজকেও দেখলাম সাধারণ ভাবে যে প্রশ্ন করা উচিত ছিল, সিবিআই তা করেনি।’
এই মামলায় মঙ্গলবার দুপুরে হাই কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়ে ওএমআর শিটের ‘ডিজিটাইজ়ড কপি’। কোনও নথির ডিজিটাইজ়ড কপি বলতে কী বোঝায়, জানতে চান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, পর্ষদ ‘ডিজিটাইজ়ড’ ওএমআর শিটের নাম করে যে সব তথ্য দিচ্ছে, সেগুলি হাতে টাইপ করা। তার সঙ্গে আসল কপির কোনও মিল নেই। অথচ হাতে টাইপ করা ওই তথ্যকেই পর্ষদ ‘ডিজিটাইজ়ড’ বলছে। প্রাথমিকের আসল ওএমআর শিট আগেই নষ্ট করার অভিযোগ রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ২টোয় ছিল ফের শুনানি। সেখানে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি। এর আগে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের তদন্তে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল নিম্ন আদালত।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এই মামলার তদন্ত নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেছিলেন, ”এই মামলার কিছু হবে না। সিবিআইকে দিলাম…এর চেয়ে উলুবেড়িয়া থানাকে কেসটা দিলে ভাল হত! কেস ডায়েরিতে অনেক তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।” তিনি আরও বলেন, ”এর আগে বহু বার সতর্ক করেছিলাম। আমি এই তদন্তে খুশি নই। এটা আমি বিশ্বাস করি না যে, সিবিআইয়ের আধিকারিকরা বোকা। তাঁরা অত্যন্ত সেয়ানা। সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কি আবার তদন্তের নির্দেশ দিতে হবে? যে কোনও বুদ্ধিমান লোক আসল প্রশ্ন করবে। কী প্রশ্ন করবে সেটাও কি আমাকে বলে দিতে হবে? আমি চিত্কার করতে চাই না। আপনারা বাধ্য করছেন। সিবিআইয়ের এই অফিসাররা লজ্জাহীন। আগে সিবিআই শুনলে লোকে ভয় পেত। এখন লোকে হাসে। জানে কিছু হবে না।”