ঐতিহ্যবাহী জয়দেব মেলা শুরু

ঐতিহ্যবাহী জয়দেব মেলা শুরু। বীরভূমের ইলামবাজার থানার জয়দেবের ঐতিহ্যবাহী জয়দেব মেলা শুরু হল আজ থেকে। এই মেলার শুভ সূচনা করেন রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা। তিনি বলেন , এই জয়দেব মেলা ভারতবর্ষের একটি প্রখ্যাত মেলা , বর্তমানে ট্রাস্টের মধ্যদিয়েই মেলা পরিচালিত হয়, কিন্তু আমরা চাইব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঐতিহ্যবাহী জয়দেব মেলা অধিগ্রহণ করে সরকারিভাবে গঙ্গাসাগর মেলার মত বৃহত্তর ও আকাশ নিক।

 

চলতি মাসের শেষে বীরভূম সফরে আসছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তখনই বীরভূম জেলা প্রশাসনের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রস্তাব দেয়া হবে যাতে জয়দেব মেলা সরকারিভাবে অধিগ্রহণ করা হয়। মকর সংক্রান্তির দিন পুণ্যস্নানের মাধ্যমে পালিত হয় জয়দেব মেলা। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার জয়দেব মেলা এক ঐতিহ্যবাহী মেলা হিসেবে পরিচিত।

 

অজয় নদের পাড়ে ছোট গ্রামে জয়দেব মেলা পালিত হয়। বীরভূমের সংস্কৃত পণ্ডিত জয়দেবের স্মৃতি তর্পণ উদ্দেশ্যের এই মেলা পালিত হয়। নদীর পাড়ে বাউল আখড়া বসে এই মেলায়। প্রতি বছর এই সময়টার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন বাউলপ্রেমীরা। মকরস্নানের দিন থেকেই শুরু হয় গান-বাজনা, মেলা ও উত্‍সব। কেন্দুলি গ্রামে গীতগোবিন্দে রচয়িতা কবি জয়দেবের জন্মস্থান। লক্ষণসেনের সভাকবি ছিলেন তিনি। তিনিই রাধামাধব মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। সেই মেলাতেই হয়ে থাকে জয়দেব মেলা।অজয় নদে মকর সংক্রান্তির দিন জয়দেব মেলা বসে।

 

বীরভূম বর্ধমান জেলার সীমান্ত বরাবর বয়ে চলে অজয় নদ। তার ধারে এই কেন্দুলি গ্রাম। সেখানে রাজা লক্ষণ সেনের সভাকরি জয়দেবের বাড়ি। যা বর্তমানে জয়দেব মেলার জন্য খ্যাত। একবিংশ শতকে সেই মেলায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হত। বর্তমানেও সেখানেই অনুষ্ঠিত হয় জয়দেব মেলা।এই মেলার আরও এক বৈশিষ্ট্য হল বাউল মেলা। কথায় আছে, জয়দেব মেলা মানেই বাউল গানের আসর। সেই সঙ্গে অবশ্যই কীর্তন হয় এখানে। প্রতি বছর এই মেলায় তৈরি করা হয় কীর্তনীয়াদের জন্য কীর্তনের আখড়া ও বাউলের আখড়া। প্রায় ৩০০ টি আখড়া তৈরি করা হয় মেলায়। এই বাউল গানের জন্য এই মেলা বেশ উল্লেখযোগ্য।

 

আরও পড়ুন – “মায়েদের থেকেই সময়ের ম্যানেজমেন্ট শেখা উচিত ” দেশের পড়ুয়াদের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী

বীরভূম জেলার জয়দেব মেলা দেখতে বহু মানুষের সমাগম ঘটে থাকে।পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তি বাঙালির এই বিশেষ উত্‍সব। বাংলা পৌষ মাসের শেষের দিন এই উত্‍সব পালন করা হয়। এদিন সূর্য মকর রাশিতে প্রবেশ করে, তাই এটি মকর সংক্রান্তি বা উত্তরায়ণ নামে পরিচিত। সব মিলিয়ে এই উত্‍সবের রয়েছে এক আলাদা ও বিশেষ মাহাত্ম্য। বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় জানিয়েছেন , আগামী চার দিন যাতে সুষ্ঠুভাবে জয়দেব মেলা পরিচালিত করা যায় তার জন্য বীরভূম জেলা প্রশাসন এবং বীরভূম জেলা পুলিশ সর্বতোভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।