পাক সেনার উর্দি পরে ছবি, সীমা আসলে কে? সাধারণ পাক বধূ না গুপ্তচর? তদন্তে এটিএস, পাক বধূ সীমা হায়দারের ভারতে অনুপ্রবেশ দিয়ে ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য। পাক বধূ সীমা হায়দারের ভারতে অনুপ্রবেশ দিয়ে ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য। জট ছাড়াতে তদন্তে নেমেছে উত্তরপ্রদেশ এটিএস থেকে শুরু করে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। সীমা আসলে কে? ভারতীয় প্রেমিকের টানে সীমান্ত পার করে আসা সাধারণ পাক বধূ না পাকিস্তানি গুপ্তচর? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তার মধ্যেই প্রকাশ্যে এল একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সীমা এটিএসকে নাকি জানিয়েছেন যে, ভারতে আসার আগে ১২ লক্ষ টাকায় তিনি পাকিস্তানে একটি বাড়ি বিক্রি করেছিলেন। এবং সেই টাকাতেই তিনি মোবাইল, পাসপোর্ট এবং বিমানের টিকিট কিনেছিলেন। কিন্তু এটিএস মনে করছে, পাকিস্তানে একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতেন সীমা। কোনও বাড়িও তিনি বিক্রি করেননি। এ ছাড়াও সীমার পাসপোর্ট এবং টিকিট নিয়েও তদন্তকারী আধিকারিকদের মনে সন্দেহ দানা বাঁধছে বলে এটিএস সূত্রে খবর।
সূত্রের খবর, সীমার থেকে প্রাপ্ত নগদ এবং অ্যাকাউন্টের লেনদেন নিয়েও নাকি তদন্ত শুরু করেছে এটিএস। সীমার স্বামী গোলাম হায়দারকে নিয়েও সন্দেহ দানা বাঁধছে তদন্তকারীদের মনে। সীমা পাকিস্তান থেকে চলে আসার পর থেকে স্ত্রীকে ফেরানোর দাবিতে গোলাম বার বার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু বিগত কয়েক দিন ধরে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না বলেই নাকি জানতে পেরেছে এটিএস। মঙ্গলবার তাঁর সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। ফোন ধরার জন্য মেসেজও পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।
পাশাপাশি, সীমা তদন্তকারী আধিকারিকদের জানিয়েছেন, তিনি পঞ্চম শ্রেণি অবধি পড়াশোনা করেছেন। কিন্তু তাঁর ইংরাজি বুলি এবং হাবভাব দেখে তদন্তকারীরা মনে করছেন, সীমা উচ্চশিক্ষিত এবং বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তাঁর হাতে বেশ কয়েকটি কাটা-পোড়ার দাগ রয়েছে। সীমার দাবি, সেগুলি গোলামের অত্যাচারের চিহ্ন। কিন্তু দাগগুলি ‘বিশেষ’ প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় হয়েছে কি না, তা নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে এটিএস।
সীমার ভারতে প্রবেশের খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তাঁকে নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছিলেন এটিএস আধিকারিকেরা। সেই তদন্ত চলাকালীন একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে বলে এটিএস সূত্রে খবর। আর তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই সীমাকে জেরা শুরু করেছে এটিএস।
আরও পড়ুন – নাকা চেকিং করার সময় প্রায় ৪৪ লাখ টাকা উদ্ধার, আটক দুই বাইক…
সূত্রের খবর, সম্প্রতি এমন একটি ছবি এটিএসের হাতে এসেছে, যেখানে সীমাকে পাক সেনাবাহিনীর উর্দিতে দেখা গিয়েছে। এমনকি, একাধিক ভারতীয় সেনা জওয়ান এবং নয়ডার বহু যুবকের সঙ্গে তাঁর সমাজমাধ্যমে পরিচয় ছিল বলেও এটিএস সূত্রে খবর। আর সেই কারণেই নাকি সীমার উপর সন্দেহ বাড়ছে তদন্তকারী আধিকারিকদের।
এটিএস সূত্রে খবর, পাক সেনার উর্দিতে তাঁর ছবি প্রসঙ্গে সীমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে, তিনি বার বার আলাদা আলাদা উত্তর দিয়েছেন। সূত্রের খবর, কখনও সেই ছবি যে তাঁর, সে কথা মানতে অস্বীকার করেছেন সীমা। আবার কখনও সেই ছবি তাঁর ভাইয়ের উর্দি পরে তোলা বলে জানিয়েছেন। এমনকি, ওই উর্দি তাঁর ভাইয়ের বন্ধুর বলেও নাকি এক বার দাবি করেছেন সীমা। ভারতীয় সেনা জওয়ান এবং দিল্লি-এনসিআর এলাকার যুবকদের সঙ্গে তাঁর সমাজমাধ্যমে যোগ নিয়েও নাকি কোনও সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।